মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ক্রিসমাস উৎসবের মাঝেও গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলা

ক্রিসমাস উৎসবের মধ্যেও গাজা উপত্যকায় বন্ধ নেই ইসরাইলি হামলা। গাজার এই অন্ধকার যুগের শেষ হবে এমনটাই আশা জেরুজালেমের আর্চবিশপের। যুদ্ধ বিরতির চুক্তিও আটকে আছে শুধু আলোচনায়। এরইমধ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে লেবানন। এদিকে বড়দিনের শুরুতেই রাজধানী তেল আবিবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হুথি বিদ্রোহীরা।

পুরো বিশ্ব যখন ক্রিসমাস বা বড়দিনের উৎসবে মাতোয়ারা তখন গাজা উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইলিরা। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে একযোগে হামলা চালায় তারা। গ্লোবাল ফুড ক্রাইসিস মনিটর বলছে, ৭৫ হাজার ফিলিস্তিনি দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছে। অপুষ্টিতে ভুগছে ৩০ শতাংশ মানুষ। বড়দিনের আয়োজনেও তাদের দিন কাটছে অনাহারে।

যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেম পরিদর্শনে এসে জেরুজালেমের আর্চবিশপ জানান, গাজা উপত্যকায় সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এমন বিপর্যয়ের মধ্যেও তিনি আশার বার্তা শুনিয়েছেন। তার মতে, গাজার অন্ধকার সময়ের শেষ হবে খুব শিগগিরই। যুদ্ধ শুরু পর থেকেই উৎসবের রঙ নেই পবিত্র ভূমি হিসেবে পরিচিত জেরুজালেমে।

জেরুজালেমের আর্চবিশপ কার্ডিনাল পিয়েরবাতিস্তা পিজাবাল্লা বলেন, 'পবিত্র ভূমিতে যুদ্ধ, ঘৃণা ও বিভাজন নিয়ে সবাই কথা বলছে। বড়দিনে বিশ্ববাসীর প্রতি আমাদের বার্তা হচ্ছে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ধরে রাখা। বড়দিনে আমাদের চাওয়া মানুষের মধ্যে ঐক্যে গড়া। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের এটিই একমাত্র চাওয়া।'

এই যখন অবস্থা, তখন কাতারের রাজধানী দোহায় গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার স্পষ্ট কোনো বার্তা নেই। হামাস ও ইসরাইলের সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়টিও রয়েছে অনিশ্চয়তায়। এমন অবস্থায় অনেকটাই হতাশ মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ বিন মোহাম্মদ আল আনসারি বলেন, 'গাজার সংকট নিয়ে যখনই আমরা আলোচনায় বসি তখনই দেখি সমাধানের সম্ভাব্য সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে গাজার মানবিক সংকট চরমে পৌঁছাচ্ছে, যা সত্যিই লজ্জার। বর্তমান প্রজন্ম ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংকট মোকাবিলা করতে ব্যর্থ। যতই দিন যাচ্ছে সংকট ততই বাড়ছে।'

এদিকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে নতুন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অভিযোগ দায়ের করেছে লেবানন। লেবাননের সঙ্গে বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ক্রিসমাসের প্রথম প্রহরে ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবজুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় সাইরেন। ইয়েমেন সীমান্ত থেকে হুথিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামালায় আহত হয় অন্তত ৯ জন। যদিও আইডএফ-এর দাবি, ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই সেগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে হুথির সামরিক মুখপাত্র জানান, টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শত্রুপক্ষের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে সফল হামলা চালানো হয়েছে।

হুথির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারা বলেন, 'ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটিশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীসহ সাধারণ জনগণ। নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ধর্মীয়, নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব পালন করছে হুথিরা। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।'

ফিলিস্তিনিদের স্বপ্ন, আসছে বছরে তারা আবারও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, শিশুরা আবারও স্কুলে ফিরে যেতে পারবে। প্রতিদিনের মতো মৃত্যুর ক্ষণ গণনা করতে হবে না। তাদের জন্য থাকবে স্বাস্থ্যকর খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ।

এসএস