মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

অস্ত্র জমার বিপরীতে আসাদ সেনাদের অস্থায়ী বসতি কার্ড দিচ্ছে এইচটিএস

অস্ত্র ও মূল্যবান সামগ্রী জমা দেয়ার বিপরীতে আসাদ সেনাদের অস্থায়ী বসতি কার্ড দিচ্ছে এইচটিএস। সিরিয়ার রাজধানীতে এই কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরপরাধ সেনা সদস্যরা স্বাভাবিক জীবন শুরুর স্বপ্ন দেখছেন। বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মাদ আল জুলানির আস্থাভাজন ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এদিকে নতুন সিরিয়ায় কুর্দিদের পরিণতি কী হবে? তা নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা।

দামেস্কের একটি সরকারি ভবনের সামনে জড়ো হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে দীর্ঘ এই সারি রেশন সংগ্রহের জন্য। তবে বাস্তবতা ভিন্ন।

আসাদ সমর্থিত সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অস্ত্র জমা দিচ্ছেন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরীর আল শামের কাছে। বিনিময়ে সংগ্রহ করছেন অস্থায়ী বসতি কার্ড। তিন মাস মেয়াদি কার্ডের মাধ্যমে নতুন সিরিয়ায় স্বাভাবিক জীবন ধারণের স্বপ্ন দেখছেন এক সময়কার আসাদপন্থিরা। তবে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, এই সুবিধার বাইরে থাকবেন তারা।

সেনাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এক সময় সেনাবাহিনীতে কাজ করলেও কর্মকর্তারা আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে। আশা করছি সবাই হাতে হাত রেখে নতুন দেশ গড়বো।’

অন্য একজন সেনা বলেন, ‘অন্যায়কে দমন করে অন্যায় থেকে মুক্তি পাওয়া বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ছিল। এইচটিএস দেশকে ঢেলে সাজাচ্ছে। আমরা তাদের পাশে থাকবো।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ওয়ালিদ আব্দুল রাবো বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে যুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সেনা সদস্যদের জন্য এটি সেটেলমেন্ট সেন্টার। তারা সিরিয়া সরকারের অস্ত্র ও মূল্যবান সামগ্রী হস্তান্তর করছে। বিপরীতে তিন মাস মেয়াদি সেটেলমেন্ট কার্ড পাচ্ছে। যারা আমাদের ভাইদের আক্রমণ করেনি, তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।’

দেশ পুনর্গঠনের কাজ চলছে পুরোদমে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মুহরাফ আবু কাসরা'কে। বাশার শাসন পতনের অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এইচটিএসের শীর্ষ এই নেতা।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন আসাদ হাসান আল শিবানি। ৩৭ বছর বয়সী শিবানি এর আগে বিদ্রোহী শাসিত ইদলিবের রাজনৈতিক দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন।

তবে ক্ষমতা পালাবদলের খেলায় ব্যাকফুটে কুর্দিরা। দেশের চার ভাগের এক ভাগ এলাকা কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের নিয়ন্ত্রণে। রাজধানীর দখল নিয়েছে এইচটিএস, যাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন দিয়েছে কুর্দিদের প্রধান শত্রু তুরস্ক। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটসকে দমনের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এসডিএফ হলেও ট্রাম্প প্রশাসন এই সমর্থন অব্যাহত রাখবে কী না, তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।

কোঙ্গরা স্টারের শীর্ষ কর্মকর্তা ব্রিভান ইউনেস বলেন, ‘কুর্দিশ ভাষাকে সংবিধানে স্বীকৃতি দেয়ার অর্থ আমাদের স্বীকৃতি দেয়া। আশা করি বাশার সরকারের মতো নতুন সরকার ভুল করবে না। আমরা সিরিয়ারই অংশ। দেশকে ভাগ করার কোনো ইচ্ছা নেই। নতুন দেশে সবার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’

তবে কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এইচটিএস কুর্দিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আঙ্কারা। এখনও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় মানজিব অঞ্চলে দুপক্ষের সংঘর্ষ চলছে।

এসএস