মধ্যপ্রাচ্য , উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

গাজায় জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি ট্রাম্পের

আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে গাজায় জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যুদ্ধবিরতি চান তিনি। এছাড়া গাজা ভয়াবহ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত। গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য প্রধান প্রবেশদ্বার রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ার জন্য বৈঠক করেছে হামাস ও ফাত্তাহ গোষ্ঠী। এদিকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় একদিনে ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করেই দক্ষিণ লেবাননেও ইসরাইলি হামলায় নতুন করে নিহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। ফলে, হুমকিতে পড়েছে চলমান যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ।

২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেই নিজের সব পরিকল্পনা সাজিয়ে নিচ্ছেন তিনি। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অভিবাসন নীতি, চলমান বৈশ্বিক যুদ্ধ বন্ধে এরইমধ্যে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছেন ট্রাম্প।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে চান ট্রাম্প। তবে এর আগে গাজায় জিম্মিদের মুক্তি না দিলে দায়ী ব্যক্তিরা গুরুতর সমস্যায় পড়বে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। নিজের ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, মধ্যপ্রাচ্যে যারা মানবিক সংকট তৈরি করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু নিয়ে এটি ট্রাম্পের সবচেয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এ সময় তিনি বাইডেন প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের অভিযোগ হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে গত এক বছরে অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। জিম্মিদের নিয়ে তারা উপহাস করেছে। তবে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে ইসরাইল।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরাইলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।

ম্যাথিউ মিলার বলেন, 'ইসরাইলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দরকার। এ বিষয়ে ইসরাইলের কাছে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।'

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রতিনিধি গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকটের কথা তুলে ধরেন। কূটনৈতিকভাবে সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, 'সমাধানের আশায় আমরা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। কারণ গাজায় মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ তা বলে বুঝানো যাবে না। ফিলিস্তিনিদের কাছে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।'

এদিকে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর প্রধান পথ গাজা ও মিশর সীমান্তে অবস্থিত রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ার ব্যাপারে বৈঠক করেছে হামাস ও পশ্চিম তীরে ক্ষমতায় থাকা ফাত্তাহ গোষ্ঠী। গত মে মাসে রাফাহর গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলি বাহিনীর হাতে গেলে নিজেদের অংশ বন্ধ করে দেয় মিশর। ক্রসিংটি বন্ধ হওয়ায় গাজায় ত্রাণ সরবরাহ গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। খাবারের জন্য হাহাকার করছে ফিলিস্তিনিরা।

ফিলিস্তিনের একজন বাসিন্দা বলেন, 'আমি ওভেন, জামাকাপড় অন্য কিছুই চাই না। আমি শুধু আমার বাড়িতে ফিরতে চাই। আমি খাবার আর নিরাপত্তা চাই।'

এমন অবস্থায়ও থেমে নেই ইসরাইলি হামলা। তাদের হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজারের ওপরে। একযোগে স্থল, বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে নেতানিয়াহুর বাহিনী।

এসএস