মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ইসরাইলকে কূটনৈতিকভাবে আরো কোণঠাসা করবে!

লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে সাময়িক যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ইসরাইলকে কূটনৈতিকভাবে আরো কোণঠাসা করে ফেলবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বিশ্বনেতারা বারবার গাজায় যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও হিজবুল্লাহর সাথে সমঝোতা করার সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমন করতে পারবে কী না- তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন তারা। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের উদ্যোগে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিপাবলিকান শিবির বলছে, যুদ্ধবিরতির মূল কৃতিত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্পেরই।

তাহলে কী এবার সর্বোচ্চ সক্ষমতা নিয়ে ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস নির্মূল অভিযানে নামতে যাচ্ছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী! গেল বুধবার ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রী যখন লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করলেন, তখন থেকেই হতভাগ্য ফিলিস্তিনিদের পরিণতি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।

৬০ দিনের সাময়িক যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত তেল আবিব-কে কূটনৈতিকভাবে চাপে রাখবে এমন ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর নজর এখন গাজার দিকে। নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে আগামী ২ মাস সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। তবে এমনটা হলে ইসরাইল বিশ্বরাজনীতির শক্তিশালী বলয় থেকে আবারও ছিটকে যাবে, যা নেতানিয়াহুকে আরও কোণঠাসা করে ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বিশ্বনেতাদের উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন নেতানিয়াহুকে কতখানি সমর্থন দেবে তা নিয়েও শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জোনাথান লর্ড বলেন, ‘ইসরাইল কূটনৈতিকভাবে চরম অনিশ্চিত পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা এখন সর্বোচ্চ সক্ষমতা নিয়ে গাজায় ফিরতে চায়। সেখানে সংঘাতের তীব্রতা বাড়িয়ে আরও মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। এমনটা হলে বিশ্ব দরবারে ইসরাইল আরও অনেক বেশি কোণঠাসা হয়ে পড়বে।’

যুদ্ধবিরতির এই সিদ্ধান্ত হিজবুল্লাহর জন্য ইতিবাচক হতে যাচ্ছে এমন বিশ্লেষণও হাজির করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ইসরাইলের সাথে সংঘাতে জড়ানোর পর লেবাননের এই সশস্ত্র সংগঠনটি তাদের একাধিক শীর্ষ নেতাকে হারিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে গেছে সামরিক সরঞ্জাম, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। আগামী ৬০ দিনের বিরতি কাজে লাগিয়ে হিজবুল্লাহ তার সক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ পাবে এমন আভাস দিচ্ছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।

প্রতিসপ্তাহে নিজ দেশে জনরোষের মুখ পড়তে হচ্ছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে। জিম্মি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন খোদ সাধারণ ইসরাইলিরা। লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সাফল্য নেতানিয়াহুর ঝুলিতে কোনো বাড়তি পয়েন্ট যোগ করবে না বলে মনে করছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা। বরং হামাসের সাথে সমঝোতায় আসতে না পারার ব্যর্থতা আরও ফলাও করে প্রকাশ পাবে এমনটাই আশঙ্কা তাদের।

এদিকে, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে হিজবুল্লাহ-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে যাচ্ছে- এটিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ব্যাজ অব অনারের মতো ধারণ করতে চাইলেও, সেখানে ফোড়ন কাটছে রিপাবলিকান শিবির। বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে বাইডেনের এমন উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পই লাভবান হবেন, এমনটাই দাবি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের প্রচারণা দলের।

এএম