উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

শপথের আগেই প্রশ্নের মুখে ট্রাম্পের মন্ত্রিসভা

শপথ গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার সদস্যদের যোগ্যতা ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দায়িত্ব পাওয়া ফক্স নিউজের সঞ্চালক পিটের হেগসেথের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে খোদ রিপাবলিকান শিবির। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল পদে মনোনীত ম্যাট গেটসের মাদক মামলা ও স্বাস্থ্য দপ্তরের রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের ভ্যাক্সিন বিদ্বেষ নিয়েও আছে বিতর্ক। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্ত্রিসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নকেই প্রাধান্য দিয়েছেন ট্রাম্প।

বিচার ব্যবস্থার সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক না থাকার পরেও ম্যাট গেটসকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ দেয়া কিংবা চীন-ইরান বিদ্বেষী মার্কো রুবিও কে পররাষ্ট্র দপ্তরে নিযুক্ত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিন্ন কোনো অভিসন্ধি আছে। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমে।

বিশ্বস্ততার ভিত্তিতে মন্ত্রিসভা বণ্টনের পেছনে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নীতি, চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আইনি স্বার্থের বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে বলে দাবি করছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে ম্যাট গেটস, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পদে তুলসি গ্যাবার্ড ও স্বাস্থ্য দপ্তরে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের নাম চূড়ান্ত করার পেছনে মূল কারণ এই তিন রিপাবলিকান শুরু থেকে বাইডেন প্রশাসনের আমেরিকা নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পেছনে সামরিক জোট ন্যাটোর দুর্বলতাকে দায়ী করা ও ২০২২ সালে ডেমোক্র্যাট নীতির সাথে আপোষ করতে না পারায় স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার মতো কারণে গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে তুলসি গ্যাবার্ডকে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা বিভাগ ও স্বাস্থ্যখাতের মতো ৩ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর বণ্টন করেছেন ট্রাম্প।

বর্ডার জার নামে পরিচিত টম হোম্যানকে বর্ডার ও কাস্টমস বিভাগ, ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদে স্টিফেন মিলার এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি পদে ক্রিস্টি নোয়েম ট্রাম্পের অভিবাসননীতি কার্যকর করা ও অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ছাড়া করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টির বিরুদ্ধে গুলি করে অবাধ্য কুকুর হত্যার অভিযোগ উঠলেও দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যুতে তাকেই বিশ্বাস করছেন ট্রাম্প।

চীন বিরোধী অবস্থানের জন্য নির্বাচনের আগে থেকেই আলোচিত সমালোচিত হয়েছেন ট্রাম্প। পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব বণ্টনের সময় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নীতি, ইউক্রেনে অর্থায়ন ও ইসরাইল ফিলিস্তিন ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কিউবান মূলত অভিবাসী পরিবারের সন্তান।

ইসরাইলের একনিষ্ঠ সমর্থক ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিনের সমালোচক হিসেবে মার্কোর জনপ্রিয়তা আছে। আর ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালস চীন ও রাশিয়াবিরোধী হলেও ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা কমানোর পক্ষে রয়েছেন।

কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় ট্রাম্প 'টু পয়েন্ট ও' মন্ত্রিসভায় যাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের প্রতি বিশ্বস্ততা আর রিপাবলিকান স্পিরিটের মানদণ্ডে তাদের হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। দিন শেষে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে মন্ত্রিসভা সাজিয়ে আমেরিকাকে কতটা গ্রেটার বানাবেন ট্রাম্প সে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৪ বছর।

এএম