ইসরাইলি হামলায় ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর হামাসের নেতৃত্বে আসার আলোচনায় ছিলেন খালেদ মিশাল, মূসা আবু মারজুক আর ইয়াহিয়ার ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার এর নাম। তবে হঠাৎ করেই শোনা যাচ্ছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন সংগঠনটি রাজনৈতিক শাখার ডেপুটি চেয়ারম্যান খালিল আল-হায়া। আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি না আসলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, চরম এই সংকটকালে খালিলই নেতৃত্বে আসছেন। যদিও রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডব্লিউ আই ও এন-এর মতো সংবাদসংস্থা তাকে ডেপুটি চিফ হিসেবে উল্লেখ করছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) হামাসের পক্ষ থেকে খালিল হায়াই প্রথম টেলিভিশন বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন বুধবার (১৬ অক্টোবর) ইসরাইলি হামলায় হামাসের আরেক নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু হয়েছে। খালিল আরও বলেন, যতদিন গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হবে, জিম্মি ইসরাইলিদের কাউকেই মুক্ত করবে না হামাস।
হামাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান খালিল আল-হায়া বলেন, 'আমাদের নেতার মৃত্যুতে শোক জানাই। ইয়াহিয়া সিনওয়ার আমাদের ভাই ছিলেন, তিনি আমাদের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ছিলেন। বীরের মতো তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি শহীদ হয়েছেন। যুদ্ধ করতে করতে তিনি প্রাণ দিয়েছেন, অস্ত্র হাতে বীরের মত তিনি শত্রুদের জবাব দিতে চেয়েছিলেন।'
ফুয়াদ শুকুর, ইসমাইল হানিয়া, হাসান নাসরাল্লাহ ও সবশেষ ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুতে গোটা পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরাইল যখন উচ্ছ্বসিত, তখন পাল্টা প্রতিশোধের হুংকার দিয়েছেন খালিল। সাফ জানিয়েছেন, যারা ফিলিস্তিন অধিগ্রহণ করতে চায়, তাদের তিলে তিলে ধ্বংস করবে হামাস।
খালিল আল-হায়া বলেন, 'কথা দিচ্ছি আমাদের নেতার রক্ত বৃথা যাবে না। তার মৃত্যু আমাদের পথ দেখাবে, উজ্জীবিত করবে। যতদিন পর্যন্ত মুক্তিকামী জনতার লক্ষ্য পূরণ হবে না, ততদিন আমাদের সংগ্রাম চলবে। আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাই। নিজেদের ভূখণ্ডে ফেরত যেতে চাই। ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই।'
নেতানিয়াহু প্রশাসনের সাথে খালিলের ব্যক্তিগত শত্রুতার ইতিহাসও বেশ লম্বা। ২০০৭ সালে ইসরাইলি হামলায় দুই ভাইসহ পরিবারের আট সদস্যকে হারান খালিল। ২০০৮ সালে আইডিএফ'র রকেট হামলায় নিজের ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালে খালিল আল-হায়ার আরেক সন্তান, পুত্রবধূ ও নাতি একসাথে নিহত হন।
৭ অক্টোবরের হামলার পর দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে খালিল বলেছিলেন, এই হামলা প্রমাণ করে, ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তিনি আরও দাবি করেন, গাজার শাসনব্যবস্থার দখল নিয়ে সেখানে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সচল করা কখনোই তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণের পক্ষে লড়াই করতে এসেছেন।