গাজা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েও পার পাচ্ছেন না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশজুড়ে চলমান আন্দোলন বিক্ষোভে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি। এ ঘটনায় এবার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও নেতানিয়াহুর ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এদিকে, হামাস বলছে ইসরাইল সেনারা গাজা না ছাড়লে জিম্মিদের সবার প্রাণ যাবে।
হামাসের হাতে এখনো জিম্মি প্রায় ১০০ জন। তাদের মুক্ত করতে ইসরাইলকে হামাসের সঙ্গে দ্রুত চুক্তিতে আসার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। তাদের অভিযোগ জিম্মিদের নিহতের ঘটনায় নেতানিয়াহু ও তার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে দায়ী। নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে অব্যাহত আছে আন্দোলন।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘ইসরাইল সরকারের অপরাধমূলক কাজের দিকে আমরা অভিযোগ তুলছি। কোনো সহিংসতাকে আমরা প্রশ্রয় দিবো না।’
জিম্মিদের হত্যার দায় নেতানিয়াহুর সরকারকে নিতে হবে। তারা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে না গিয়ে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছে বলেও জানান আন্দোলনকারীরা।
আরো একজন আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘জিম্মিদের পরিবারের দুঃসহ জীবনের কথা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
আন্দোলন বিক্ষোভের মুখে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। আন্দোলনকারীদের দমাতে চলছে ধরপাকড় এবং আইন ও আদালতকে ব্যবহার করারও চেষ্টা করছে তার প্রশাসন। কিন্তু আন্দোলনের ঢল কিছুতেই থামাতে পারছেন না। জিম্মি নিহতের ঘটনায় হামাসের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাসকে চরম মূল্য দিতে হবে। জিম্মিদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় নিহতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাই। আমরা তাদের জীবিত উদ্ধার করার প্রক্রিয়ার খুব কাছাকাছি ছিলাম। শেষ মুহূর্তে সফল হতে পারিনি। এই হত্যার জবাবে হামাসকে চরম মূল্য দিতে হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও নেতানিয়াহুর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার অভিযোগ, জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতির চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলমান। আমরা এখনও যুদ্ধবিরতি জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে নেতানিয়াহুর সঙ্গে নয়। মধ্যস্ততাকারী দেশ কাতার ও মিশরের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।’
এদিকে, হামাস বলছে নেতানিয়াহুর সামরিক অভিযান বন্ধ না করলে বাকি জিম্মিদের ঠিকানা হবে কফিন। হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র বলেন, ‘জিম্মিদের জীবিত না মৃত অবস্থায় চান, সেই সিদ্ধান্ত তাদের পরিবারকে নিতে হবে।’
নেতানিয়াহুর অতি-ডানপন্থী মিত্ররাও এবার তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। ইসরাইলের ৩০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্স স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। নিজ দেশ এবং মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকেও চাপে আছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।