হোয়াইট হাউজ ছেড়ে আসার তিন বছরেরও বেশি সময় পর এই প্রথম নেতানিয়াহুর সাথে দেখা করলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে শুক্রবার ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মার আ লাগো রিসোর্টে বৈঠক করেন তারা। আলোচনায় গুরুত্ব পায় ইরান ও গাজা ইস্যু। এসময় গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরাইলের ভূমিকা নিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিসের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, 'না, আমার কিছুই বলার নেই। সে কট্টর বামপন্থী নেতা। তার কারণে স্যান ফ্রান্সিস্কো ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি শুধু ধ্বংস করতেই জানেন। ইসরাইল সম্পর্কে তার মন্তব্য অপমানজনক ছিল। একজন ইহুদি কীভাবে তাকে ভোট দিতে পারে?'
জিম্মিদের মুক্তি ও কামালা হ্যারিস প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু জানান, ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্য জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক আলোচনায় নেতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলবে না।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ে একটি সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করছি। হামাসের নেতারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।'
মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনের আগে ইসরাইল কোনো ধরণের ঝুঁকি নিতে চায় না। বিশেষ করে গাজা যুদ্ধে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট শিবিরের নীতি ও মনোভাব যাচাই করাই ছিল নেতানিয়াহুর মূল উদ্দেশ্য। তবে শুক্রবারের এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প আরও বলেন, 'আমাদের সম্পর্ক কখনোই খারাপ ছিল না। সবসময়ই আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। আমি ইসরাইলের জন্য যা করেছি, অতীতে কোনো প্রেসিডেন্টই এমনটা করেননি।'
জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক আলোচনা চালিয়ে যেতে ইতালির রোমে প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে কী না এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেননি নেতানিয়াহু। আর ট্রাম্প মনে করেন, যেকোনো মূল্যে জিম্মি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে হবে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে হামাসকে চাপ দেয়া হচ্ছে। এতেই কাজ হবে।'
ট্রাম্প বলেন, 'পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের অবস্থা শোচনীয়। আশা করি সকলেই ঠিক আছেন। কিন্তু আমি নিশ্চিত, অধিকাংশ জিম্মিই ভালো নেই। এটা কোনোভাবেই চলতে দেয়া যায় না।'
বৈঠকের আগে ট্রাম্পের হাতে জিম্মি এক কন্য শিশুর বাঁধানো ছবি তুলে দেন নেতানিয়াহু। শিশুটি এখনো জিম্মি অবস্থায় আছে। তার পরিবারের সদস্যরা এই ছবিটি ট্রাম্পের কাছে পাঠিয়েছেন। ছবি হাতে নিয়ে শিশুটিকে নিরাপদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প।
মার্কিন রাজনীতির ভবিষ্যতের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে ইসরাইলের যুদ্ধনীতি। তাই আগেভাগেই একটি ধারণা নিয়ে গেলেন নেতানিয়াহু। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্রমেই আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ফিলিস্তিন ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের অবস্থান।