রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: জেলেনস্কি, পুতিন ও বাইডেনকে দুষলেন ট্রাম্প

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: জেলেনস্কি, পুতিন ও বাইডেন দুষলেন ট্রাম্প
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: জেলেনস্কি, পুতিন ও বাইডেন দুষলেন ট্রাম্প | Ekhon tv
0

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া সমঝোতায় আসতে চাইলেও ক্রেমলিন মুখপাত্রের অভিযোগ এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা দাঁড় করাতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও শান্তি প্রস্তাবে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব দেখছে না মস্কো। এদিকে, রোববার ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রুশ হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, জেলেনস্কির জন্যই এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের রোষানলে পড়েছেন রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি স্বপ্রণোদিতভাবে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শুরু করেছেন- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই অভিযোগ কোনোভাবেই মানতে পারছে না ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ। কিয়েভবাসীদের দাবি, যুদ্ধ থামানোর বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে, এখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন ট্রাম্প। মেনে নিতে পারছেন না ব্যর্থতার গ্লানি।

এক অধিবাসী বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। যুদ্ধ শুরু করেছে পুতিন। রাশিয়া আমাদের ভূখণ্ডে আগ্রাসন শুরু করেছে।’

এই বক্তব্য প্রমাণ করে ট্রাম্প সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, একদিনের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন। কিন্তু যখন তা পারলেন না, আশপাশের সবাইকে দোষ দিতে শুরু করলেন।

গেল রোববার ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সুমিতে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চলতি বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা করে রাশিয়া। পরদিন প্রতিক্রিয়া ট্রাম্প বলেন, এই যুদ্ধের দায় ইউক্রেনের জেলেনস্কি, রাশিয়ার পুতিন ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন- ৩ জনকেই নিতে হবে।

বিশেষ করে জেলেনস্কির দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ২০ গুণ বেশি শক্তিধর একটি দেশের সাথে যুদ্ধ শুরু করে ইউক্রেন ভেবেছিলো মিত্রদের অস্ত্র সহায়তা নিয়ে পার পাওয়া সম্ভব।

প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ শুরু হতে দেয়াটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ। বাইডেন চাইলে যুদ্ধ থামাতে পারতেন। জেলেনস্কিও চাইলে যুদ্ধ আটকানো যেতো। আর পুতিনের কোনো প্রয়োজন ছিল না যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার। দোষ সবারই সমান।’

এদিকে, ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে ট্রাম্প প্রশাসন যে চুক্তির কথা বলছে সে বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই মন্তব্য করেছেন ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। এছাড়া, ইউক্রেন ইস্যুতে ওয়াশিংটনের ওপর আস্থা রাখলেও শান্তি চুক্তি কবে নাগাদ কার্যকর হতে পারে তা গোপন রাখতে চায় মস্কো।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘শান্তি চুক্তির কোনো সুনির্দিষ্ট রূপরেখা নেই আমাদের সামনে। তবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। তবে আবারও বলছি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক এবং অর্থপূর্ণ যোগাযোগ হয়েছে। তাদেরকে সাধুবাদ জানাই।’

এমন প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান মার্ক রুটকে নিয়ে ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় আহত সৈন্যদের পরিদর্শন করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর আলোচনা চলছে বিশ্বের নানা প্রান্তে- অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিন ও উইটকফের মধ্যে আলোচনার পাশাপাশি পৃথিবীর অন্য প্রান্তে ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠক চলছে। কৃষ্ণ সাগরের নিরাপত্তা নিয়ে তুরস্কে সেনাপ্রধানরা বৈঠক করছেন।’

ক্ষমতা গ্রহণের পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা তরান্বিত করতে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। ওয়াশিংটনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখলেও সমঝোতা আলোচনায় ছাড় দেয়ার কোনো ইঙ্গিত দেখাচ্ছে না মস্কো। আর ইউরোপের সমর্থন ইউক্রনের দিকে ভারী হওয়ায় ‍নতুন করে চাপ দিতে পারছে না ওয়াশিংটন। ফলে, চলমান এই সংঘাতের অবসান নিয়ে ধোঁয়াশা দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না।

এএইচ