নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীসহ ৫৯ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানবিক নানা দিক নিয়ে কয়েক দশক ধরে কাজ করছে ইউনাইটেড নেশন্স রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি, সংক্ষেপে ইউএনআরডব্লিউএ। গাজা উপত্যকায় গেলো অক্টোবর থেকে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে নিস্তার পায়নি সংস্থাটি।
ইউএনআরডব্লিউএ'র প্রধান কার্যালয় ধ্বংস করে দেয়ার পাশাপাশি প্রায় ২০০ কর্মীকে হত্যা এবং ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে সংস্থাটিতে অনুদান বন্ধের দাবিতেও জোর প্রচার চালাচ্ছে তেলআবিব। এমন পরিস্থিতিতে আগস্ট পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ হাতে আছে বলে ইউএনআরডব্লিউএকে রক্ষার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের বাঁচাতে সহযোগিতার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, 'অসহনীয় পরিবেশ আর নিজেদের দুঃখ-বেদনার মধ্যেই ইউএনআরডব্লিউএ'র নারী ও পুরুষ সদস্যরা যেকোনো উপায়ে নিজেদের কাজ অব্যাহত রেখেছেন অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে। গাজায় মানবিক কার্যক্রমের মেরুদণ্ড তারা। যারা সমর্থন জানিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। প্রত্যেকের কাছে আমার অনুরোধ, ইউএনআরডব্লিউএ আর ইউএনআরডব্লিউএ'র কর্মীদের বাঁচান। অনুদান অব্যাহত রাখুন।'
শুক্রবার (১২ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ইউএনআরডব্লিউএ'র জন্য অনুদান নিশ্চিতের আহ্বানে সাড়া দেয় ১১৮টি দেশ। এর আগে সংস্থাটির প্রতি আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন জোরদারে যৌথ সমঝোতায় স্বাক্ষর করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। যদিও এর মধ্যেই ইউএনআরডব্লিউএ বন্ধে জোরদার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ'র কার্যালয় প্রাঙ্গণে ড্রোন ও অস্ত্র পাওয়ার দাবি করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
ইউএনআরডব্লিউএ'র কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজ্জারিনি বলেন, 'ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অধিকার রক্ষায় এবং বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিকভাবে সংকট সমাধানে কাজ করে বলে ইউএনআরডব্লিউএ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। একে বাঁচাতে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা আর আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোও পরবর্তীতে একইভাবে ভুক্তভোগী হবে।'
১৯৪৯ সালে প্রথম আরব-ইসরাইলি যুদ্ধের পর ইউএনআরডব্লিউএ গঠন করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। তখন থেকেই অবরুদ্ধ গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের পাশাপাশি জর্ডান, লেবানন, সিরিয়াতেও ৫৮টি শরণার্থী শিবিরে ১৬ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয় নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। গাজায় চলমান যুদ্ধে নতুন করে আশ্রয়হীন ১৪ লাখের বেশি মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতেও বড় ভূমিকা পালন করছে ইউএনআরডব্লিউএ।
২৮১ দিনের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহত কমপক্ষে ৩৮ হাজার ৩৪৫ জন, আহত ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ।