ক্রমেই ধূসর হয়ে আসছে ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলের আকাশ। অধিকাংশ ভবন থেকে বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। দানবের মতো আসছে জলপাই রঙের ট্যাংক, সাঁজোয়া যান। গাজার জাবালিয়া অঞ্চলের দৃশ্য এটি।
গাজার ৮ শরণার্থী শিবিরের মধ্য সবচেয়ে বেশি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয় জাবালিয়া শহরে। হামাসের অপতৎপরতা বন্ধের দোহাই দিয়ে জাবালিয়ার শরণার্থী শিবির গুড়িয়ে দিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শনিবার (১৮ মে) এই শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলায় অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। গেল সপ্তাহে উত্তর গাজায় হামলা জোরদারের পর নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ৯ লাখ ফিলিস্তিনি।
এদিকে সাইপ্রাসের করিডোর ব্যবহার করে সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ পাঠাতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো। শনিবার যুক্তরাষ্টের অস্থায়ী জেটি থেকে ত্রাণ নিয়ে নুসেরাত শরণার্থী শিবিরের দিকে অগ্রসর হতে থাকা ট্রাকের সামনে ভিড় করে ক্ষুধার যন্ত্রণায় মরিয়া গাজাবাসী। দূর থেকে ট্রাক দেখতে পেয়ে ছুটে যান ত্রাণের আশায়। এ সময় চলন্ত ট্রাকে উঠে পড়েন কেউ কেউ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ট্রাক থেকে ত্রাণ বোঝাই প্যাকেজ রাস্তায় ছুঁড়ে দিতে বাধ্য হন স্বেচ্ছাসেবকরা।
অন্যদিকে গত নভেম্বর থেকে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার ঐক্যে ফাটল ধরেছে এমন খবর প্রচার করে আসছিল গণমাধ্যমগুলো। গাজায় যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনার অভাব এই বিভক্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, গাজার শাসনব্যবস্থা নিয়ে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা প্রস্তাবিত ৬ দফা পরিকল্পনা ৮ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হলে কেবিনেট থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গ্যান্টস।
তিনি বলেন, 'গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বড় পরিসরে চিন্তা করার সময় এসেছে। ঝুঁকি ও সম্ভাবনা দু'টো বিষয়েই সমান গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। ৮ জুনের মধ্যে ৬ দফা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে হবে। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করাসহ গাজার নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলের দখলে আনতে হবে।'
যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার পরামর্শ না শুনলে গোটা ইসরাইলের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা জানান তিনি।
বেনি গ্যান্টস বলেন, 'আপনি জাতীয় স্বার্থের বদলে ব্যক্তিগত পছন্দকে গুরুত্ব দিলে মন্ত্রীসভার সদস্যদের সংকটে পড়েত হবে। দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে, আমরা মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করবো।'
এদিকে,হামাসের হাতে জিম্মি চতুর্থ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরাইল।
ইসরাইলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, 'দুঃখের সাথে জানাচ্ছি সন্ধ্যায় উদ্ধারকৃত মরদেহটি রন বিনইয়ামিন নামের এক ইসরাইলি জিম্মির। তার আত্মার শান্তি কামনা করি। আইডিএফ ও ইসরাইলের গোয়েন্দা ইউনিটের যৌথ অভিযানে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। হামাস সদস্যরা রনকে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহটি গাজায় পাঠিয়ে দেয়।'