মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নেই ঈদ আনন্দ

শরণার্থী শিবিরে পরিণত রাফা শহরে অভিযান চালানোর দিনক্ষণ ঠিক করেছে ইসরাইল। এ ঘোষণার চরম বিরোধিতা করছে জাতিসংঘসহ অনেক দেশ। সেনা প্রত্যাহারের পর ধ্বংসস্তুপে পরিণত খান ইউনিসে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা। দরজায় ঈদ কড়া নাড়লেও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নেই কোন আনন্দ।

গাজা উপত্যকার রাফা শহর পরিণত হয়েছে পুরোপুরি শরণার্থী শিবিরে, যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ১৫ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। সেই রাফায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সেনা অভিযানের ঘোষণা নিয়ে আতঙ্কে পুরো বিশ্ব। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ বলছে, এই শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালালে পরিণতি হবে বিপজ্জনক। ৬ মাসের এই সেনা অভিযানে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজার দক্ষিণাঞ্চল।

এদিকে গাজার খান ইউনিস শহর থেকে বেশিরভাগ সেনা প্রত্যাহারের পর বিধ্বস্ত নগরীতে ফিরে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরের ৫৫ শতাংশ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় ত্রাণ সরবরাহকারী স্বেচ্ছাসেবী নিহতের পর দক্ষিণাঞ্চল থেকে বেশিরভাগ সেনা সরিয়ে নিয়েছে আইডিএফ। এরমধ্যেই দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। গত বছরও ফিলিস্তিনিরা নিজ বাড়িতে পরিবার, প্রতিবেশিদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলেও এবার সেখানে কংক্রিটের জঞ্জাল। পুরো রমজানেও খোলা আকাশের নিচে ইফতার, সাহরি সেরেছেন বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি। এবার তাদের মধ্যে নেই ঈদের কোন আমেজ।

গাজার বাসিন্দারা বলেন, আমাদের সব ছিল কিন্তু যুদ্ধ সব শেষ করে দিয়েছে। ইসরাইলিরা বোম মেরে ঘর উড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এতোদিন স্কুলে ছিলাম। দিনে অতিরিক্ত গরম আর রাতে ঠান্ডা। অচেনা মানুষের ভিড়ে আছি আত্মীয়রা নেই।

অনেকে আবার এই বিধ্বস্ত জনপদেই খুঁজছেন ঈদের আনন্দ। বেঁচে থাকা পরিবার পরিজনদের নিয়ে ঈদ উদযাপনে বাজারগুলোতে কেনাকাটা করছেন অনেকে। তবে অন্যান্যবারের মতো নেই উৎসবের আমেজ। ঈদ উপলক্ষে খাবার তৈরি করে আয়ের উৎস খুঁজছেন অনেকে।

এক ব্যবসায়ী বলেন, ধ্বংসের মধ্যেই ঈদ আনন্দ খুঁজছি। বাচ্চাদের খুশি করতে এ পেস্ট্রি বানাচ্ছি। ঘর ছেড়ে রাফায় থাকছি। তবু আল্লাহকে ধন্যবাদ।

পুরো রমজানে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে অনেক আলোচনা হলেও তা এখনও আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কায়রোতে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিলিস্তিনের দাবি পূরণ করছে না ইসরাইল। এদিকে ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেসের আরও সদস্য। এরমধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সি ডোম সিস্টেম স্থাপন করেছে ইসরাইল।

জাতিসংঘের বিশেষায়িত কমিটি বলছে, ফিলিস্তিনকে সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি চলতি মাসেই বিবেচনা করা হবে। এর আগে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আবেদন করা হয়। ২০১১ সালে প্রথম ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘে আবেদন করা হয়। যদিও শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বলছে, ইসরাইলি আর ফিলিস্তিনিরা নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করবে।