এর ফলে প্রায় চার বছরে প্রথমবার কোন প্রান্তিকের বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলো প্রতিষ্ঠানটি।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকে লক্ষ্য অনুযায়ী খাবার বিক্রি করতে পারেনি ম্যাকডোনাল্ডস।
এ ঘোষণার পরপরই পুঁজিবাজারে ম্যাকডোনাল্ডসের শেয়ারের চার শতাংশ দরপতন হয়েছে। এর আগে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রভাব ব্যবসায় পড়েছে বলে স্বীকার করেন ম্যাকডোনাল্ডসের প্রধান। তবে এজন্য ইসরাইলকে সমর্থন নয় বরং এ বিষয়ে ম্যাকডোনাল্ডসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকে দায়ী করেন তিনি।
ইসরাইলবিরোধী শিবিরের ক্ষোভ ও পণ্য বর্জনের ডাকে ম্যাকডোনাল্ডস ছাড়াও সম্প্রতি বিপাকে পড়ে স্টারবাকস, কোকাকোলাসহ কয়েকটি বহুজাতিক পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান। মধ্যপ্রাচ্যে ভোক্তা কমে যাওয়ায় গেল সপ্তাহেই বার্ষিক বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করেছে স্টারবাকস।
ম্যাকডোনাল্ডস জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে অর্থবহ প্রভাব ফেলেছে ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ এবং চীন ও ভারতে গেল বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল এক শতাংশেরও কম, মাত্র শূন্য দশমিক সাত শতাংশ, যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম।
ম্যাকডোনাল্ডসের প্রধান নির্বাহী ক্রিস কেম্পজিনস্কি বলেন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে তো বটেই, ফ্রান্সেও প্রতিষ্ঠানটির আয় কমে গেছে। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মুসলিম অভিবাসী কমিউনিটির বাস ফ্রান্সে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল ম্যাকডোনাল্ডস। বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির ৪০ হাজারের বেশি শাখার বড় অংশ চালান স্বাধীন ব্যবসায়ীরা। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ম্যাকডোনাল্ডসের পাঁচ শতাংশ আউটলেট রয়েছে।
ম্যাকডোনাল্ডসের ইসরাইলভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজি ইসরাইলি হাজার হাজার সেনাসদস্যকে বিনামূল্যে খাবার বিতরণের প্রস্তাব দিলে সেখান থেকে শুরু হয় বিতর্ক। এরপরই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বর্বরতায় ক্ষুব্ধ বিশ্বের অনেক দেশের জনতা ফুড ব্র্যান্ডটি বর্জনের ডাক দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় কুয়েত, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে ফ্যাঞ্চাইজি মালিকরা ম্যাকডোনাল্ডসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করে। এর প্রভাবে ম্যাকডোনাল্ডসের বৈশ্বিক বিক্রয় প্রবৃদ্ধি তৃতীয় প্রান্তিকের প্রায় নয় শতাংশ থেকে অর্ধেকের বেশি কমে বছরের শেষ প্রান্তিকে নেমে যায় চার শতাংশের নিচে, যা বার্ষিক গড়ের কম।
অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ভালো বিক্রি রেকর্ড করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্য, জার্মানি আর কানাডাতেও বিক্রি বেড়েছে।