হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বন্ধ ইসরাইলের বড় প্রকল্পগুলোর কাজ। গাজা ও পশ্চিম তীরের দেড় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের ইসরাইলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা শঙ্কায় দেশ ছেড়েছেন ১০ হাজারের বেশি-বিদেশি শ্রমিক। কর্মী সংকটে তেল আবিবের নির্মাণ খাতের উৎপাদনশীলতা নেমে গেছে ৩০ শতাংশে। এমনকি প্রতি মাসে আর্থিক ক্ষতি ঠেকেছে ৮৩ কোটি ডলারে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের পাশে হাত বাড়িয়েছে ভারত। গেল বছর করা চুক্তি অনুযায়ী তেল আবিবে ৪২ হাজার শ্রমিক পাঠাতে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই নির্মাণ শ্রমিক। ইতোমধ্যে উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানার কয়েক হাজার শ্রমিক অংশ নিয়েছেন নিয়োগ পরীক্ষায়।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারত। ১৪০ কোটি মানুষের দেশটিতে শহরাঞ্চলের ৬.৬ শতাংশই বেকার। ২৯ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের ১৭ শতাংশ কর্মহীন। ভারতের চেয়ে ৫ গুণ বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ায় সংঘাতপূর্ণ ইসরাইলে যেতে দ্বিধা করছেন না শ্রমিকরা। এমনকি শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি ভারত সরকার।
শ্রমিকরা বলেন, দেশে কাজ নেই। তাই সবাই দেশ ছাড়ছে। যুদ্ধ চললে কী করার আছে? আমাদের তো পেট চালাতে হবে। টাকার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে যেতে হচ্ছে। দেশে ঠিকঠাক মজুরি পেলে কেন কেউ বাইরে কাজের সন্ধানে যাবে?
দেশের বাইরে কাজের ক্ষেত্রে ভারতে চালু আছে ই-মাইগ্রেট পোর্টাল। যেখানে নাম নথিভুক্ত করা হলে কাজ এবং মজুরির নিশ্চয়তা দেয় সরকার। কিন্তু ইসরাইলে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে রাখা হয়নি পোর্টালটিতে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারত চিকিৎসা বীমা বাধ্যতামূলক করলেও ইসরাইলে এ দিকটিও উপেক্ষিত।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষায় শ্রমিকদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলছে নরেন্দ্র মোদি, এমন অভিযোগ করছে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস। শিগগিরিই আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।
৪২ হাজার শ্রমিক পাঠানোর চুক্তি হলেও ভারত থেকে আরও ১ লাখ শ্রমিক নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইসরাইল। শ্রমিকদের মাসিক পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার রুপি।