ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সমর্থনে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে একের পর এক হামলা চালিয়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এমন পরিস্থিতিতে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন জোট দাঁড় করিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, লোহিত সাগরে জাহাজে হুতিদের হামলা ঠেকাতে নতুন অপারেশন প্রোসপারিটি গার্ডিয়ান জোটে যোগ দিয়েছে ২০টির বেশি দেশ। এদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইতালি। যোগ দিতে পারে জার্মানিও। তবে ইসরাইল-হামাস সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় পরিসরে ছড়ানোর শঙ্কায় আট দেশ জোটে যোগ দিয়েছে নাম প্রকাশ না করার শর্তে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, 'লোহিত সাগরে বিদ্যমান বিপদ, জাহাজ চলাচলে হুমকির বিষয়ে আলোচনা চলছে। জাহাজে হামলা চলতে থাকলে তা সারা বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর। তাই নৌপথগুলোতে জাহাজের নির্বিঘ্ন চলাচল, বিশ্ববাণিজ্যের পণ্য, তেল ও অন্যান্য মালামালের নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা ভীষণ জরুরি। এ লক্ষ্যে অপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান গঠন করা হয়েছে।'
ইসরাইল-হামাস সংঘাত যখন মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে শঙ্কা জোরালো হচ্ছে, তখনই ইরান সমর্থিত হামাসের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ইসরাইলকে কৌশলগতভাবে চাপে ফেলতে বিশ্ববাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নৌপথ লক্ষ্য করে কয়েক সপ্তাহ ধরে চালাচ্ছে হামলা।
এতে বেশ চাপেই পড়েছে যুদ্ধবাজ ইসরাইল ও পশ্চিমা মিত্ররা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নতুন জোট গঠনের পর আরও কঠোর হুতিরা। জানিয়েছে, হুতিদের লক্ষ্যবস্তু করা হলে জবাবে হামলা হবে মার্কিন জাহাজে।
ইয়েমেন হুতি নেতা আব্দেল-মালেক আল-হুতি বলেন, 'ইসরাইলি শত্রুরা ছাড়া আর কোনো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে বিন্দুমাত্র বিঘ্ন ঘটাইনি আমরা। শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে রক্ষার চেষ্টা করে আসছে। ইসরাইলি ও ইসরাইলের সাথে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত জাহাজ রক্ষার স্বার্থে অন্যান্য দেশকেও এর সঙ্গে জড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ উসকে দেয়ার বোকামি করলে আমরাও শান্ত থাকবো না।'
হুতিদের হামলার জেরে বেশ কয়েকটি বহুজাতিক শিপিং প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে লোহিত সাগরপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। ইসরাইলের এইলাট বন্দরে কার্যক্রম ৮৫ শতাংশ কমে গেছে এ ক'দিনে, জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
হামলা বন্ধে হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছিল ইসরাইল। কিন্তু হুতিদের ওপর হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা আক্রমণ এবং ইসরাইল-হামাস সংঘাত আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেয়ার শঙ্কায় নীরব ওয়াশিংটন।





