হুতিদের জব্দ করা জাহাজ এখন পর্যটন স্থান

শাহনুর শাকিব
0

ছোট নৌকায় করে এই জাহাজ দেখতে আসছেন দর্শনার্থীরা। ছবি তোলার অনুমতিও পেয়েছেন তারা।

নভেম্বরে নাটকীয়ভাবে ইসরাইলি ব্যবসায়ীর মালিকানা দাবি করে লোহিত সাগরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ গ্যালাক্সি লিডার জব্দ করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এই জাহাজ নোঙর করে রাখা হয়েছে হুতি নিয়ন্ত্রিত লোহিত সাগরের আল সালিফ বন্দরে।

জব্দ করা ওই জাহাজ এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকায় করে এই জাহাজে আসছেন দর্শনার্থীরা। হুতিরাও তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন।

হুতি জনসংযোগ কর্মকর্তা সামির আল রাবিত জানান, 'ইসরাইলি জাহাজের উপর দাঁড়িয়ে আছি। গ্যালাক্সি লিডার এখন দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। ইসরাইলের জন্য জাহাজ হলেও ইয়েমেনের সব প্রদেশের মানুষের জন্য এটা পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ইয়েমেনের অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন। পার্ক আর সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পরিবর্তে তারা এখানে আসছেন।'

যদিও শুধু জাহাজের ডেকেই ঘোরাঘুরি আর ছবি তোলার অনুমতি আছে পর্যটকদের। হুতিরা জানান, গ্যালাক্সি লিডারের ক্রুর সদস্যদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়। অনেক দেশই তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

বাহামাসের পতাকাবাহী এই জাহাজ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় হোদেইদাহ বন্দরে, এরপর রাখা হয় আল সালিফ বন্দরে। ছিনতাই করা এই জাহাজে এখন ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। গাজার মানুষের জন্য জোরালো সমর্থন তাদের।

এক দর্শনার্থী জানান, 'গাজার মানুষের জন্য সমর্থন জানিয়ে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। আমরা ইসরাইলের আরও জাহাজ লোহিত সাগর থেকে জব্দ করবো। গতকালও দুইটা জাহাজে হামলা করা হয়েছে।'

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের জাহাজ জব্দের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্র বাণিজ্যে বাড়ছে ঝুঁকি। ইসরাইলের জাহাজ দাবি করে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা।

যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই দাবি করে আসছে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করছে হুতিরা। রোববার (৩ ডিসেম্বর) লোহিত সাগরে তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, বাব আল মানদাব প্রণালীতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন দিয়ে হামলা করা হয়েছে জাহাজগুলোতে। হুতি মুখপাত্র বলছেন, গাজায় সামরিক অভিযান চলতে থাকলে লোহিত সাগর দিয়ে যাওয়া ইসরাইলের সব জাহাজে হামলা করা হবে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করার দাবি জানাচ্ছেন জাহাজের মালিকরা। গাজায় সংঘাতের কারণে পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে অস্থিরতা। গাল্ফ আর লোহিত সাগর দিয়ে জ্বালানি তেল, গ্যাস অবকাঠামো আর জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে।

জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অস্থিরতার কারণে অঞ্চলটিতে সমুদ্র বাণিজ্য ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এসএস