জার্মানির সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বেশ তৎপর দেশটির সরকার। সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সলর ফ্রেডরিক মার্জ দেশটির সামরিক শাখাকে ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশটির আইনসভায় একটি খসড়া বিল পাস করেছে । জোট সরকারের বিশ্বাস, সম্ভাব্য রুশ হুমকি মোকাবিলা ও যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো আকস্মিক পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তনের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বেশ কার্যকর হবে সিদ্ধান্তটি।
নতুন আইন অনুযায়ী, স্বেচ্ছাসেবী ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হবে । বর্তমানে দেশটির ১ লাখ ৮০ হাজার সৈন্য রয়েছে। ২০৩৫ সাল নাগাদ তা ২ লাখ ৬০ হাজারে উন্নীত করা হবে। এছাড়া, রিজার্ভ সেনা যুক্ত হবে আরও ২ লাখ।
জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম নিয়ে ইউরোপের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো অবগত আছে। জার্মানির নতুন মডেলটি বেশ আকর্ষণীয়। এটি অন্য দেশগুলোকেও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করবে।’
আরও পড়ুন:
নবীনদের সামরিক বাহিনীতে টানতে আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থাও রেখেছে জার্মান সরকার। যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে তাদের মাসিক বেতন নির্ধারিত হবে ২ হাজার ৬০০ ইউরো; যা বর্তমান বেতনের চেয়ে ৪৫০ ইউরো বেশি।
তবে স্বেচ্ছাসেবী ভিত্তিতে নির্ধারিত কোটা পূরণ না হলে প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে যোগদান করানো হবে। এছাড়া, আগামী বছর থেকে সব ১৮ বছর বয়সী তরুণ তরুণীর কাছে সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগ্রহের বিষয়ে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদান বাধ্যতামূলক বিবেচিত হবে।
তবে জার্মান সরকার দেশটির সামরিক শাখাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চাইলেও, বহু বছর ধরে অবহেলার শিকার দেশটির সেনাবাহিনী। ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের পর প্রায় তিন দশক ধরে, জার্মানির প্রতিরক্ষা খাতে মোট জিডিপির ২ শতাংশেরও কম অর্থ বরাদ্দ ছিল। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের পর সামরিক বাহিনী জোরদারের বাড়তি মনোনিবেশ করে জার্মান সরকার।
লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের ফেলো মিনা অল্যান্ডারের মতে, ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থানের কারণে পুরো মহাদেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জার্মানি।





