মানুষের মাথার চেয়েও বড় পেঁয়াজ, আস্ত মানবদেহের চেয়ে বেশি ওজনের তরমুজ, এক টন ওজনের একটি মিষ্টি কুমড়া। এমন দৈত্যাকার সব সবজি ফলানোতেই আনন্দ রুশ এই কৃষিপ্রেমীর।
আলেক্সান্ডার কুসোভ। ২৯ বছর বয়সী এই তরুণের এমন অভিনব শখের শুরুটা প্রায় ১০ বছর আগে। অনলাইনে বিশাল বিশাল কুমড়োর ছবি দেখে সিদ্ধান্ত নেন, রাশিয়ার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এমন সবজি ফলাবেন তিনি।
রাশিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা আলেক্সান্ডার কুসোভ বলেন, ‘অনলাইনে বিশাল কুমড়োর ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভীষণ আশ্চর্যের, জাদুকরী একটা বিষয়। আমি গবেষণা শুরু করলাম এবং জানতে পারলাম যে আমাদের দেশে কেউ কখনও এমন কুমড়ো চাষ করেনি। আরও খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে প্রতি বছর কুমড়ো চাষের প্রতিযোগিতা হয়, যেখানে প্রতিযোগীরা আসেন সারা বিশ্ব থেকে। তারপরই আমার মনে হলো যে কেন রাশিয়ার প্রথম বিশালাকার কুমড়োটি আমি চাষ করার চেষ্টা করব না?’
২০২৪ সালে ৮১৭ কেজির একটি মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করেন কুসোভ। এখন তার লক্ষ্য এক টন ওজনের কুমড়া ফলানোর রেকর্ড ভাঙা। চলতি বছর মাত্র ৩১ কেজির জন্য লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না বটে!। তবে ৯৬৯ কেজি ওজনের কুমড়ো উৎপাদন করে রাশিয়ায় গড়েছেন নতুন রেকর্ড।
আরও পড়ুন:
লক্ষ্যে এগোনোর শুরুটা বেশ কঠিনই ছিল। দৈত্যাকৃতির ফসল ফলাতে শুরুতেই দরকার উপযোগী বীজ। কোথায় মিলবে সেটা? দোকানেই মেলে, এমন সাধারণ বীজ দিয়ে এই ঢাউস আকৃতির সবজি ফলানো যে অসম্ভব! কুসোভ জানান, প্রত্যেক বিশাল কুমড়োর একটি নিজস্ব বংশতালিকাও থাকে।
আলেক্সান্ডার কুসোভ বলেন, ‘বংশতালিকায় কুমড়োর বীজটি কোন বছর এবং কোন ধরনের কুমড়োতে ছিল, কোন কুমড়ো দিয়ে এটিকে ক্রস করা হয়েছিল ইত্যাদি বিস্তারিত বিবরণ দেয়া থাকে। ফুলের পরাগায়নের পর কুমড়ো ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে। ২০ দিন পর থেকে দ্রুত বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এ কুমড়োটি সর্বোচ্চ বৃদ্ধির সময় দিনে ৩০ কেজি করে ওজন বেড়েছে। ৬০ দিন পর থেকে এ হার কমতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে বৃদ্ধি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমার এ কুমড়োগুলি আর বড় হচ্ছে না।’
এ বছর বিশাল বিশাল পেঁয়াজও উৎপাদন করেছেন কুসোভ। সবচেয়ে বড়টার ওজন ছিল ৬৭০ গ্রাম, যেটি রাশিয়ায় এযাবতকালের সবচেয়ে বড়। তার ফলানো তরমুজের ওজন এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হয়েছে ৬৬ কেজি।
তরুণ উদ্যোক্তা জানান, একটি লতানো সবজি ঠিকভাবে বড় হওয়ার জন্য দরকার প্রায় ১২০ বর্গমিটার জায়গা, আর প্রতিদিন এক হাজার লিটার পানি। উচ্চ তাপ বা শীত, দুই থেকেই দরকার সুরক্ষা। এছাড়া বিশেষ পুষ্টি আর প্রতিদিন রোগবালাই ধরলো কি না কিংবা কোনো অংশ পঁচে গেলো কি না, তা তো দেখতে হয়ই।





