জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচন: শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সব দল

ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

রোববার পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষবারের মতো প্রচারণা চালিয়েছে জার্মানির সবকটি দল। জন জরিপে রক্ষণশীল সিডিইউ এগিয়ে থাকলেও একক সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই। তাই পার্লামেন্ট ঝুলে যাবার শঙ্কা রয়েছে। এদিকে অভিবাসন বিরোধী নব্য নাৎসিবাদী দল এএফডির জনসমর্থন বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে।

ডিসেম্বরে অনাস্থা ভোটে সরকার পতনের পর জার্মানিতে তীব্র হয়েছে রাজনৈতিক সংকট। জন জরিপে একক সরকার গঠিত না হবার বিষয়টিও প্রায় নিশ্চিত। তাই শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয়ের ক্ষেত্রে দলগুলো গুরুত্ব দিচ্ছে ইউক্রেন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যু।

বর্তমানে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন- সিডিইউ'র প্রতি জনসমর্থন সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ। ফলে পরবর্তী চ্যান্সেলর হবার দৌড়ে এগিয়ে দলটির নেতা ফ্রেডরিক মার্জ। শুক্রবার শেষবারের মতো প্রচারণা চালান ৬৯ বছর বয়সী এই নেতা।

স্থায়ীভাবে সীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি অভিবাসী গ্রহণ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও জার্মানিকে ইইউর নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রে পরিণতের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। বাড়ানো হবে ইউক্রেনের প্রতি সহায়তা।

সিডিইউয়ের চ্যান্সেলর প্রার্থী ফ্রেডরিক মার্জ বলেন, ‘নতুন সরকার ও চ্যান্সেলরের প্রধান দায়িত্ব জার্মানিকে ইইউতে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। আন্তর্জাতিকভাবে নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রের তকমা পুনরুদ্ধার করা। বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করতে আমি ও আমার দল বদ্ধপরিকর।’

২০ শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অলটারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি। অভিবাসীদের বিতাড়িতের জন্য ‘রিমিগ্রেশন নীতি’ ঘোষণা করেছেন দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী অ্যালিস উইডেল।

ইউক্রেনকে সমর্থন বন্ধের পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনে দেয়া হয়েছে প্রতিশ্রুতি। নব্য নাৎসিবাদের তকমা জুটলেও দলটিকে সমর্থন দিয়েছেন খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প। কট্টর ডানপন্থীদের উত্থান ঠেকাতে দলটির সঙ্গে জোট না করার ঘোষণা দিয়েছে সবকটি দল।

১৫ শতাংশ সমর্থন নিয়ে জরিপে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন বা এসডিইউ। এবারো দলটির চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলজ।

কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মন্দা মোকাবিলা করতে হচ্ছে জার্মানিকে। যার জন্য দায়ী করা হয় শলজের নীতিকে। নভেম্বরে ভেঙে যায় শলজের জোট সরকার। ভঙ্গুর অর্থনীতি সত্ত্বেও ইউক্রেনের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে এসডিইউ।

এসডিইউয়ের চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলজ বলেন, আমরা ইউক্রেনকে কোনোভাবেই ছেড়ে যাবো না। আমরা তাদের ওপর অনধিকার চর্চাও করবো না। যিনি ইউক্রেন চালাবেন, তিনিই যাতে দেশটির ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপকে শক্তিশালী করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

জোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে চতুর্থ অবস্থানে থাকা গ্রিন পার্টি। বর্তমানে দলটির প্রতি জনসমর্থন ১৩ শতাংশ।

এএফডির সঙ্গে সরকার গঠনের বিষয়ে বাকি দলগুলোর ঐকমত্য থাকলে গঠিত হতে পারে ৩ দলের জোট সরকার। এতে শলজের দল ক্ষমতায় থাকলেও চ্যান্সেলরের ব্যাটন যেতে পারে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সিডিইউ এর নেতা মার্জের হাতে।

৬৩০ আসনের জন্য লড়াই করছেন সাড়ে ৪ হাজারের বেশি প্রার্থী। যাদের বেছে নেয়ার দায়িত্ব পালন করবেন প্রায় ৬ কোটি ভোটার। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

এএইচ