রাশিয়ার সঙ্গে আড়াই বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনের আশার পালক হয়ে এসেছিল এফ সিক্সটিন যুদ্ধবিমান। গেল ৩ আগস্ট প্রথমবারের মতো পশ্চিমাদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পায় কিয়েভ। তবে, শেষ পর্যন্ত ওই এফ সিক্সটিন বিমানই তছনছ করে দিয়েছে গোটা জেলেনস্কি প্রশাসনকে।
গেল সপ্তাহে রুশ হামলা প্রতিহতের সময় বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান। নিহত হন এর পাইলট। ঘটনার চার দিন পর ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর প্রধান মাইকোলা ওলেশচুককে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বরখাস্তের ঘোষণায় কোনো কারণ উল্লেখ না করলেও জেলেনস্কি জানান, যেকোনো মূল্যে বাহিনীকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। সঙ্গে শক্তিশালী করতে হবে নেতৃত্ব।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'বিমানবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিমানবাহিনীর সকল সদস্যদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের যোদ্ধা ও দেশকে সুরক্ষা দিতে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।'
তিন সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে ইউক্রেন। ইতোমধ্যে দখল করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। গকাল (শুক্রবার, ৩০ আগস্ট) আরও দুই কিলোমিটার এলাকার অভ্যন্তরে প্রবেশের দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। যা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে যুদ্ধের মোড়। সফলতা পাওয়ায় ইউক্রেনের জন্য বাড়ছে পশ্চিমা সহায়তা। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অভিযোগ, দেশটির অভ্যন্তরে মার্কিন অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়লে এর দায় বাইডেন প্রশাসনকেই নিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর খারকিভের একটি বহুতল ভবনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে নিহত হয়েছেন শিশুসহ বেশ কয়েকজন। হামলার পরপরই আগুন ধরে যায় ভবনটিতে। এতে বাড়ে প্রাণহানির সংখ্যা।
স্থানীয় একজন বলেন, 'এটি বেসামরিক স্থাপনা ছিল। বাচ্চারা যে পার্কে খেলছিল, সেখানে হামলা হয়। একটা ছোট শিশু এতে মারা যায়। শিশুটির বয়স মাত্র ১৪ বছর। তার সামনে সারাজীবন পড়ে ছিল। রাশিয়া কীভাবে এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারলো?'
তবে, বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্য করে গাইডেড বোমা নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া। হামলার জবাব দিতে দূরপাল্লার অস্ত্র দিতে পশ্চিমাদের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।