ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে স্যাটেলাইট!

প্রায় ৩০ বছর পর পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে ইউরোপের কৃত্রিম উপগ্রহ ইআরএস-টু। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগে সূর্যের তাপে দুই টন ওজনের উপগ্রহটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। অবশিষ্ট অংশ সাগরে এসে পড়েছে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায়। একযুগ আগেই উপগ্রহটিকে কক্ষপথ থেকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী একটি স্যাটেলাইট হলো ইআরএস-টু। ১৯৯৫ সালের এপ্রিলে চালু হওয়া এই কৃত্রিম উপগ্রহটি ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রাহকের একটি। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বলছে, এর কাজ ছিল পৃথিবীর দুই মেরু, মহাসাগর ও স্থলপৃষ্ঠের তথ্য সংগ্রহ করা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যা ও ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়গুলোও পর্যবেক্ষণ করেছে এটি। আরএস-টু এর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১১ সালে স্যাটেলাইটটি কক্ষপথ থেকে সরিয়ে নিয়ে এর কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গেল জানুয়ারিতেই ধাপে ধাপে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার করে দূরত্ব কমিয়ে পৃথিবীতে আসার নির্দেশ দেয়া হয় ইআরএস-টু'কে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে থাকার সময় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় এটি। সূর্যের তাপে পুড়ে যায় এর বেশিরভাগ অংশ। অবশিষ্ট অংশ আলাস্কা ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের দিকে প্রশান্ত মহাসাগরে আছড়ে পড়ে।

স্পেস ডেব্রিস অফিস ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক যৌথভাবে স্যাটেলাইটটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, বায়ুমণ্ডলে মহাকাশযানটির ফিরে আসার ঘটনা স্বাভাবিক। এতে ঝুঁকির মাত্রা অনেক কমছে। স্যাটেলাইটটির বাকি অংশে কোনো বিষাক্ত বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল না বলে দাবি করছে সংস্থাটি।

এদিকে ১৬ বছর কক্ষপথে কাটানোর পর ইআরএস-টু তার মিশন শেষ করে। অবশিষ্ট জ্বালানি ব্যবহার করে স্যাটেলাইটের উচ্চতা ৭৮৫ কিলোমিটার থেকে ৫৭৩ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। যেন মহাকাশের কক্ষপথে থাকা কোনো বস্তুর সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ না ঘটে।

নব্বইয়ের দশকে মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ কমানোর নির্দেশিকাগুলো অনেক শিথিল ছিল। কাজ শেষে ২৫ বছরের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় মহাকাশযান ধ্বংসের নিয়ম ছিল। বর্তমানে কক্ষপথে অনেক স্যাটেলাইট থাকায় সংঘর্ষ এড়াতে পাঁচ বছরের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।

এর আগে নিয়ন্ত্রণ হারানো ইআরএস-ওয়ান এখনও পৃথিবী থেকে ৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরতে কমপক্ষে ১০০ বছর সময় লাগতে পারে।

এসএস