জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ

0

জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর খবর প্রকাশের পর ক্রমেই তীব্র হচ্ছে আন্দোলন। দেশটির উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল এএফডির পরিকল্পনার প্রতিবাদে রোববার (২১ জানুয়ারি) তিনটি শহরে গণবিক্ষোভ হয়।

গত নভেম্বরে জার্মানির অভিবাসনবিরোধী রাজনৈতিক দল অলটারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড বা এএফডি একটি গোপন বৈঠক করে। সেখানে সংখ্যালঘু, আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়। এমনকি জার্মান সমাজে যারা একীভূত হতে পারেননি, তাদের পাসপোর্ট থাকলেও প্রত্যাবাসন করার বিষয়টি আলোচনা হয় সে বৈঠকে।

সম্প্রতি এসব তথ্য নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশটির সংবাদ সংস্থা কারেকটিভ। আলোচনায় অস্ট্রিয়ার আডেন্টিটারিয়ান আন্দোলনের নেতা মার্টিন সেলনারও ছিলেন। যার কন্সপিরেসি থিওরির মধ্যে ছিল অ-শ্বেতাঙ্গদের বিদায় করে ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গদের আনা। কট্টর এএফডি দল বৈঠকে তার সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করলেও, সেলনারের অভিবাসন পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

জার্মানিতে আন্দোলন করছে জার্মানবাসী। ছবি: সংগ্রহীত।

গত ১০ জানুয়ারি প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো জার্মানি। আতঙ্কিত হয়ে পরে পড়েন অনেক জার্মানবাসী। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।

সপ্তাহের ব্যবধানে সেটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। বার্লিন, কোলন, ড্রেসডেন, বনসহ একাধিক শহরে সমাবেশ করে কয়েক লাখ মানুষ। তাদের ব্যানার পোস্টারে লেখা ছিল নাৎসি আউট, এএফডিকে নিষিদ্ধ করার মতো স্লোগান।

প্রতিবাদকারীরা বলেন, 'ডানপন্থী এই দল ক্ষমতায় এলে জার্মানির অবস্থা আরও ভয়ানক হবে। তাদের ঠেকাতে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি। তাদের পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়ন করতে দেয়া যাবে না।'

আমি নব্বই দশকে জার্মানিতে এসেছি। আমি জার্মানিকে ভালোবাসি। তবে এএফডি এখন যা করছে তা মেনে নেয়ার মতো না।

নাৎসিদের সঙ্গে যা হয়েছিল সে ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। জার্মানির গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলনে সাধারণ মানুষ একসঙ্গে আছে।

ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এই পরিকল্পনাকে হিটলারের ইহুদিবিদ্বেষী নীতির সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিক্ষোভকে স্বাগত জানিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎ বলেন, ডানপন্থীরা জার্মানির গণতন্ত্রের ওপর আঘাত করছে।

তিনি আরও বলেন, 'জার্মানির ২ কোটির বেশি অভিবাসীর জন্য এটি ভয়ানক বার্তা। ডানপন্থী এএফডি দলের এমন বাজে পরিকল্পনার প্রভাব পুরো দেশেই পড়বে। তারা জার্মানির সংহতি নষ্ট করতে চায়। কিন্তু এখন আর তা করতে দেয়া হবে না।'

ইউরোসেপ্টিক দল হিসেবে পরিচিত এএফডি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ২০ শতাংশ সমর্থন নিয়ে দলটি জাতীয়ভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এএফডি সমর্থন অর্জনের জন্য শরণার্থী ও অভিবাসনবিরোধী পরিকল্পনা করে আসছে।

এসএস