যুক্তরাজ্যের নতুন ভিসানীতি কঠোর হবে

শাহনুর শাকিব
0

অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চাপের মুখে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভিসানীতি আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছে ঋষি সুনাক প্রশাসন।

২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসার অন্যতম কারণ ছিল বৈধ অভিবাসননীতি। যদিও ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনের শ্রম বাজারের বিভিন্নখাতে দেখা দেয় দক্ষ কর্মীর সংকট। তাই শ্রম বাজারে বিকল্প হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্টুডেন্ট ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় অভিবাসীদের পরিবারসহ যাওয়ার সুযোগ করে দেয় ব্রিটেন। ফলে ২০২২ সালে দেশটিতে অভিবাসীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় সাড়ে ৭ লাখে।

ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করতে পারেনি। সময়ের পালাবদলে দেশটিতে বেড়েছে অভিবাসীর সংখ্যা। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশটিতে পারি জমিয়েছেন ৬ লাখ ৭২ হাজার অভিবাসী। যারমধ্যে স্টুডেন্ট ভিসায় ৩৯ শতাংশ আর কেয়ার ভিসায় পরিবারসহ দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন ৩৩ শতাংশ মানুষ।

এছাড়া হংকং আর ইউক্রেন থেকে মানবিক ভিসা স্কিমেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিবাসী গিয়েছেন দেশটিতে।

এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এরই জেরে ভিসানীতি আরও কঠোর করার পাশাপাশি নতুন পাঁচদফা একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে প্রশাসন। যেখানে কেয়ার ভিসায় নেয়া যাবে না পরিবারের সদস্যদের। পারিবারিক ভিসায় যুক্তরাজ্যে যেতে হলে আবেদনকারীর ন্যূনতম আয় থাকতে হবে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড, যা আগে ছিলো ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ড। আর স্টুডেন্ট থেকে স্কিল ওয়ার্কার ভিসায় আবেদনের ক্ষেত্রেও বাড়ানো হয়েছে আয়ের পরিমাণ।

এদিকে, যুক্তরাজ্যে অভিবাসী বাড়ায় আগামী বছর জাতীয় নির্বাচনে ঋষি সুনাক ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা আইনজীবীদের।

ব্রিটেনের আইনজীবী ব্যারিষ্টার কামরুল হাসান বলেন, 'ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার দেয়া ৫টি মিশনের একটি হলো অভিবাসী নিয়ন্ত্রনে আনা। কিন্তু এখন তা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। নির্বাচনের আগে সংখ্যা কম দেখাতে না পারলে সরকার নির্বাচনী বিপর্যয়ের মধ্যে পরবে।'

বরিস জনসন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্রিটেনের অভিবাসী সংখ্যা কমিয়ে আনার অঙ্গীকার ছিলো। তবে ২০১৯ পেরিয়ে ২৩ সালের শেষ পর্যন্ত এসেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ব্রিটেনে অভিবাসী আগমন। ফলে ঋষি সুনাক সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ অভিবাসী সংখ্যা কমিয়ে আনা।

ঋষি সুনাকের নতুন এই পরিকল্পনাকে নিজ দলের সদস্যরা স্বাগত জানালেও সমালোচনা করছেন লেবার পার্টির সদস্যরা। বিরোধীরা বলছেন, অভিবাসীদের লাগাম টানতে ব্যর্থ হয়েছে কনজারভেটিভরা। আর, প্রধানমন্ত্রীর নতুন অভিবাসন নীতিকে নিষ্ঠুর বলে অভিহিত করেছে ব্রিটেনের ট্রেড ইউনিয়ন।

এসএস

আরও পড়ুন: