মহাকাশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বহনকৃত বস্তুর ওজন। তাই খাবার থেকে শুরু করে জ্বালানি কিংবা ওষুধ, প্রতিটি উপাদানই নিতে হয় মেপে মেপে। তবে কেমন হবে যদি মহাকাশেই তৈরি করা যায় নিজের খাবার?
এমনই এক মিশন শুরু করেছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা- ইএসএ। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় ল্যাবে তৈরি খাবার উৎপাদনের চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্রন্টিয়ার স্পেস। যা প্রস্তুত করা হবে মহাকাশে। ইতোমধ্যে স্পেস এক্সের ফ্যালকন নাইন রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে ছোট বায়ো রিয়েক্টর। যেখানে রয়েছে জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড ইস্টের কোষ।
যুক্তরাজ্য ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক ড. রদ্রিগো লেদেসমা আমারো বলেন, 'আমরা মহাকাশ ব্যবহার উপযোগী বায়ো রিয়েক্টর নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছি। বায়ো রিয়েক্টর এমন একটি পাত্র, যেখানে কোষগুলো বৃদ্ধি পায়। অ্যালকোহল তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। এই পাত্রেই অর্গানিজমগুলো বেড়ে ওঠে।'
মহাকাশে একজন নভোচারী প্রতিদিন গড়ে আধা কেজি থেকে দেড় কেজি খাবার খেয়ে থাকেন। প্রতি কেজি খাবার স্পেসে পৌঁছাতে খরচ হয় ২০ হাজার ডলারের মতো। ফলে মহাকাশেই এই খাবার তৈরি করা গেলে বাঁচবে অর্থ। আবার সেই অর্থ ব্যবহার করা যাবে নতুন গবেষণায়। গবেষকদের দাবি, খাদ্যের পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ায় তৈরি করা যাবে ওষুধ কিংবা বায়ো প্লাস্টিক।
ড. রদ্রিগো লেদেসমা আমারো বলেন, 'ব্যাক্টেরিয়া ও ইস্টের মতো মাইক্রো অর্গানিজম দিয়ে পৃথিবীতে বিভিন্ন উপাদান তৈরি হচ্ছে। এর মাধ্যমে মহাকাশে মাইক্রোবিয়াল খাবার, মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, বায়ো প্লাস্টিক কিংবা ওষুধ তৈরি সম্ভব। ছোট একটি কোষ নিয়ে যাওয়া গেলে মহাকাশেই সবকিছু তৈরি সম্ভব।'
দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গলগ্রহে বসতি স্থাপনে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যা কোনোভাবে সম্ভব হলেও পৃথিবী থেকে সকল উপাদান সেখানে নিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পরিকল্পনাটি সফল হলে বাসযোগ্য হবে ভিনগ্রহ।