ট্রাম্পের শুল্কনীতি, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য দ্বৈরথসহ নানা কারণে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা-এপেক'র ৩২তম আনুষ্ঠানিক সম্মেলনের গুরুত্ব যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। এছাড়াও বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রায় অর্ধেক আর মোট প্রবৃদ্ধির ৬১ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে এপেকের সদস্যরাষ্ট্রগুলো।
গেল ২৭ অক্টোবর থেকে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও এপেক নেতাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক চলবে ১ নভেম্বর পর্যন্ত। শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহাসিক গিয়ংজু শহরে আমন্ত্রিত সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট। এরপর লি জে-মিয়ং'র সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন জোটের সদস্যরা।
সভাপতির ভাষণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংকট নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং জানান, জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্য বিভাজন থাকতেই পারে। কিন্তু টেকসই উন্নয়ন ও যৌথ সমৃদ্ধির প্রশ্নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
লি জে মিয়ং বলেন, ‘আমরা একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে আছি, যেখানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা ব্যাপক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও গভীর হচ্ছে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গতি দুর্বল হয়ে পড়ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর প্রযুক্তি বিপ্লব আমাদের সামনে এক সংকটের পাশাপাশি সুযোগও এনে দিয়েছে।’
সভায় বক্তব্য দেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সিজিটিএন জানিয়েছে, এসময়, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান এই অস্থিরতা নিরসনে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন শি। বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা রক্ষা, উন্মুক্ত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি, সরবরাহ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা, বাণিজ্যের ডিজিটালাইজেশন এবং সবুজায়নকে যৌথভাবে উৎসাহিত করা ছাড়াও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত উন্নয়নে জোর দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
এর আগে গেল বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) আলোচনার ভিত্তিতে চীনা পণ্যে আরোপিত শুল্ক কমানো, দুর্লভ খনিজের রপ্তানিতে শিথিলতাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় ওয়াশিংটন ও বেইজিং। এপেক সম্মেলনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং এর বৈঠক।
এপেকের সাইডলাইনে ট্রাম্প-শি বৈঠক চলাকালে জাপানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট। এসময়, জাপানের সানায়ে তাকাইচি মন্তব্য করেন, কূটনৈতিক এই পালাবদলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক আরও গতিশীল হবে।
এপেক নেতাদের ৩২তম সম্মেলনের আগে জাপান ছাড়াও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
এপেকের মূল পর্ব হিসেবে ধরা হয় জোটের নেতাদের আনুষ্ঠানিক সম্মেলনকে। ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে সম্মেলনের মূল পর্ব। এরইমধ্যে সম্মেলনের প্রথম পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক একটি বৈঠক সেরেছেন জোটের নেতারা। ৩২তম এপেক সামিটের পর্দা নামবে আগামী ১ নভেম্বর।





