নতুন করে ৫ খনিজ রপ্তানির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ চীনের

চীনের খনিজ পদার্থ | ছবি: সংগৃহীত
0

বিশ্বের বিরল খনিজের অন্যতম সরবরাহকারী চীন। নতুন করে অন্তত পাঁচটি দুর্লভ খনিজ রপ্তানির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটি। জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বেইজিংয়ের সিদ্ধান্তটি ওয়াশিংটনকে বেকায়দায় ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র শিল্পসহ অন্যান্য অনেক সরঞ্জাম নির্মাণে ব্যবহৃত হয় চীনা খনিজ।

একে অপরকে বেকাদায় ফেলতে সবকিছুই করে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসের শেষের দিকের চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এর আগেই গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিরল খনিজ পদার্থের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নতুন করে হোলনিয়াম, আরবিয়াম, থুলিয়াম, ইউরোপিয়াম এবং ইন্টারবিয়াম— এ পাঁচটি বিরল খনিজের রপ্তানিতে কঠোর হচ্ছে চীন সরকার। এছাড়া বিরল খনিজ পরিশোধনের জন্য উচ্চ প্রযুক্তির যে সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়, সেটি রপ্তানিতেও বিধিনিষেধ দিয়েছে বেইজিং। ১ ডিসেম্বর থেকে যা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে বলে জানায় চীন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানান, কিছু কোম্পানি চীন থেকে বিরল খনিজ কিনে এগুলো সরাসরি সামরিক বা এ সংশ্লিষ্ট খাতের জন্য সরবরাহ করছে। এটি চীন ছাড়াও, আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে দাবি বেইজিংয়ের।

আরও পড়ুন:

চলতি বছরের এপ্রিলে আরও সাতটি বিরল খনিজ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে চীনা প্রশাসন। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) ২০২৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের মোট বিরল ধাতুর মোট ৯০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত করে চীন। বিশ্লেষকদের অভিমত, যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলতে চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার দুর্লভ খনিজ।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মোট বিরল খনিজের ৭০ শতাংশ চীন থেকে আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। সিএসআইএস জানায়, এফ- থার্টি ফাইভ যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার তৈরিতে বিরল খনিজের প্রয়োজন পড়ে।

সিএসআইএসের ক্রিটিক্যাল মিনারেল মিনারেল সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক গ্রেসলিন বাসকারান বলেন, ‘দুর্লভ খনিজের দুটি ধরণ রয়েছে। ওজন ভেদে এগুলো হালকা ও ভারী পদার্থ বলে। বিপত্তি ঘটবে ভারী পদার্থের ক্ষেত্রে। কেননা এগুলোর প্রায় শতভাগের উৎপাদনকারী চীন। তাদের সরবরাহ ছাড়া আমরা এগুলো পাব না।’

সামরিক শিল্প ছাড়াও, বৈদ্যুতিক গাড়ি, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, এলইডি টেলিভিশন , ক্যামেরা লেন্স এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো সরঞ্জাম উৎপাদনে বিরল খনিজের ব্যবহার হয়।

এসএস