পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে চীনকে বিশেষ সুবিধা দেবে না ভারত!

কাশ্মীর এর ছবি এবং ভারত-পাকিস্তানের পতাকা
কাশ্মীর এর ছবি এবং ভারত-পাকিস্তানের পতাকা | ছবি: সংগৃহীত
0

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান আরেকটি যুদ্ধের শঙ্কা বাড়লেও, এই মুহূর্তে কোনো পক্ষই যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা বিরোধ প্রশমনে কূটনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটতে হবে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদকে। আর ভারত-চীন সীমান্তে সেনা মোতায়েনের বিকল্প না থাকায় এ মুহূর্তে কোনো ধরণের সংঘাতে জড়ানোর ঝুঁকি নেবে না নয়াদিল্লি।

আপাতদৃষ্টিতে কোনো তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন ছাড়াই কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে ভারত। গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকিও এসেছে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে। কম যাচ্ছে না পাকিস্তানও। ভারতের সঙ্গে সমানে-সমানে টক্কর দেয়ার সক্ষমতা আছে বলে সাফ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

তবে ইতিহাস বলছে, পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের এই বৈরিতা নতুন কিছু নয়। কয়েকদিন পর পরই কাশ্মীর ইস্যুতে যুদ্ধংদেহি অবস্থানে চলে যায় দুই দেশই। বিশেষ করে ২০১৯ সালে মোদি সরকার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা বাতিল করে কেন্দ্রীয় শাসন জারির পর থেকে উপত্যকাটিতে কখনোই সেই অর্থে শান্তি ফেরেনি।

সবশেষ পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর আবারও উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। রীতিমতো সামরিক মহড়া চলছে সীমান্তের দুই প্রান্তে। রণসংগীত বাজছে ভারতীয় গণমাধ্যমেও। যদিও দৃশ্যমান এই বৈরিতার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পেহেলগাম হামলার জেরে একটি পক্ষ রাজনৈতিকভাবে লাভবান হলেও এই দ্বন্দ্ব যুদ্ধে পরিণত হবে না। 

তাদের দাবি, অস্ত্রবিরতি অমান্য করে সীমান্তের এপার ওপার গুলি চালানো হলে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক শান্তি ভঙ্গের খেসারত দিতে হবে দু'দেশকেই। বিশেষ করে চীন ফ্যাক্টরের কারণে যুদ্ধে জড়াতে পারবে না ভারত।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনকে সাবেক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রবীণ সাওনি বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর পাকিস্তানের চেয়ে বেশি বিরক্ত চীন। এর জেরেই ২০২০ সালে গালওয়ান ভ্যালিতে সংঘর্ষে জড়ায় চীন ও ভারতের সেনারা। এই ঘটনার পর থেকে চীন সীমান্তে প্রচুর সেনা মোতায়েন কর‌তে হয়েছে ভারতকে। আচমকা নোটিশে তাদের সরিয়ে আনতে পারবে না নয়াদিল্লি।’

বিশ্লেষকরা মনে করেন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে চীনকে বিশেষ সুবিধা দেবে না ভারত।

তারা মনে করেন, পেহেলগামে এই হামলার দায় সবচেয়ে বেশি বর্তায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ওপর। তথ্য প্রমাণের অভাবে এই দায় বেশি দিন অন্যের ওপর চাপানো যাবে না।

ডনের প্রতিবেদনে আরো বলা হচ্ছে, হামলার পর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিহারে একটি নির্বাচনী সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল তার।

ভারতীয় গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে, ওই বৈঠকে মোদি অনুপস্থিত থাকলেও পেহেলগাম হামলায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলছেন বিরোধী দলের নেতারা।

এসএইচ