যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ইসরাইলের কাছে সর্বকনিষ্ঠ দুই জিম্মিসহ ৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে ইসরাইল। তবে এরপরই সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি ৪ বছরের এরিয়েল বিবাস ও তার নবজাতক ভাই কেফির বিবাসের সাথে তাদের মা সিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তরে সম্মত হয়েছিল হামাস। কিন্তু মরদেহ পরীক্ষার পর দেখা গেছে সেখানে একজনের পরিচয় অজ্ঞাত। ঐ মরদেহ আদৌ জিম্মির কী না এ নিয়েও কাটছে না ধোঁয়াশা।
এদিন জিম্মিদের মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য তেল আবিবের আবু কবির ফরেনসিক ইন্সটিটিউটের নেয়ার সময় লাশবাহী গাড়ি দেখতে রাস্তার দু'পাশে ভিড় করেন ইসরাইলের সাধারণ জনগণ।
এসময়, ইসরাইলের পতাকা হাতে নীরবতা পালন করেন তারা। তবে অনেকেই অভিযোগ করেন, বাকি জিম্মিদের আদৌ ফেরানো যাবে কী না এ নিয়ে নেতানিয়াহু সরকারের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না তারা।
ইসরাইলের জন্য দিনটি শোকের। আমরা সবাই শোকাহত। আশা করি বাকি জিম্মিরা নিরাপদে বাড়ি ফিরবেন।
গভীর মনখারাপ নিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠেছি। তবে এই দেশের ওপর, দেশের সরকারের ওপর থেকে আমার আস্থা উঠে গেছে।
এদিকে, জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরের পর আবারও সেই চেনা আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে হাজির হয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে নেতানিয়াহু প্রতিজ্ঞা করেন, যে কোনো মূল্যে জিম্মিদের অমানবিক মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবেন তিনি।
হামাসের নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসরাইলিদের হৃদয় ভারাক্রান্ত হলেও, প্রত্যেক জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনার আগ পর্যন্ত এই সংঘাত থামবে না। পাশাপাশি এক জিম্মি নারীর মরদেহ উধাও হয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া নেতানিয়াহু বলেন, হামাস মানবতা বিরোধীদের মতো আচরণ করেছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমার ভাই ও বোনেরা, আজকে আমাদের সব ভুলে এক হতে হবে। শোকই আমাদের শক্তি। আজ ইসরাইলের প্রতিটি বাড়িতে শোকাবহ পরিস্থিতি। কিন্তু কথা দিচ্ছি হামাসকে এর উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। ৭ অক্টোবরের আর পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার আগ পর্যন্ত আমরা থামবো না।’
এদিকে, মরদেহের পরিচয় নিয়ে তৈরি হওয়া অসন্তোষের মধ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আলোচনায় বসতে অনীহার অভিযোগ তুলেছে হামাস।
সংগঠনটির দাবি, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরু বিষয়ে নেতানিয়াহু প্রশাসন গড়িমসি করছে। এছাড়া হামাস আরও বলছে, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ইসরাইলি সেনারা।
যা আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইনের পরিপন্থী। তবে শেষ মুহূর্তে আর কোনো অনিশ্চয়তা দেখা না দিলে শর্ত অনুযায়ী শনিবার আরও ৩ জিম্মিকে মুক্ত করবে হামাস।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পুনর্বাসন পরিকল্পনার বিকল্প খুঁজতে শুক্রবার সৌদি আরবে বৈঠক করবেন আরব নেতারা। অনানুষ্ঠানিক এই বৈঠকে গাজা পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা করবেন মিশর, জর্ডানসহ গালফ স্টেটগুলোর প্রতিনিধিদল।