ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর খুব একটা জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় মোদির এ সফর ফলপ্রসূ হয়েছে।
প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে ভারতকে সহযোগিতার হাত প্রশস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর থেকেই ভারতে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। যার মধ্যে অন্যতম অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ–থার্টি ফাইভ।
দুই পক্ষের মধ্যে নতুন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে ন্যাটোর বাইরে ইসরাইল ও জাপানের পর ভারত পাবে এফ থার্টি ফাইভ যুদ্ধবিমান। শত্রুপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এফ থার্টি ফাইভ বিমান। যা পেলে ভারতের সামরিক সক্ষমতা বাড়বে বহুগুণ।
এফ-থার্টি ফাইভ জেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জানায়, সামরিক অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি সরকারি পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকে। ভারতকেও সেই পথেই হাঁটতে হবে। গেল বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩১টি 'এমকিউ-নাইন বি সিগার্ডিয়ান' এবং 'স্কাইগার্ডিয়ান' ড্রোন কিনতে সম্মত হয় ভারত।
এবার দেশটির কাছ থেকে আরও বেশি করে সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। এছাড়াও ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১০ বছরের প্রতিরক্ষা কাঠামো ও সামরিক সহযোগিতার উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণের ঘোষণাও দেন মোদি ও ট্রাম্প।
বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক ভারত গেল কয়েক দশক ধরে রাশিয়ার কাছে থেকে অস্ত্র কিনছে। সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি ব্যাহত হয় মস্কোর। তাই ভারত এখন তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে।
নয়াদিল্লিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিতে ওয়াশিংটনের ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, এ ধরনের পদক্ষেপে দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়াবে। যা এই অঞ্চলে শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টায়ও বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, 'ভারতে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে পাকিস্তান গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ ধরনের পদক্ষেপ এই অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়িয়ে তুলবে। দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই শান্তির লক্ষ্য অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মতামত ও পদক্ষেপ আশা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের একপেশে সমর্থন থেকে সরে আসার আহ্বান করছি।'
এছাড়া ট্রাম্প ও মোদির বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ নিয়েও আলোচনা হয়। ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিচারের জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এটি নিয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানায় ইসলামাবাদ। তাদের মতে, সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি ভুলভাবে ট্রাম্পের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে ভারত।