এশিয়া
বিদেশে এখন
0

শতবছর পর সবচেয়ে বেশি তুষারপাত দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনে

শতবছর পর এ বছরের নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি তুষারপাত দেখলো দক্ষিণ কোরিয়া। রেকর্ড তুষারপাত যেমন পান্ডা ও দর্শনার্থীদের আনন্দের খোরাক, তেমনি আছে দুর্ভোগের গল্পও। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থগিত করা হয়েছে শতশত বিমান ও যান চলাচল। প্রতিঘণ্টায় পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। একই হাল পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ চীনেও।

অঝোরে ঝরছে তুষার। এর শীতল-শুভ্র স্পর্শে প্রথমবারের মতো আনন্দে মেতেছে যমজ পান্ডা-রুই বাও এবং হুই বাও। পান্ডা দু'টির মজার মুহূর্তটুকু উপভোগ করেছেন দর্শনার্থীরাও। ক্যামেরায় বন্দি করেছেন স্মৃতিটুকু। দৃশ্যটি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি চিড়িয়াখানার।

মুদ্রার এ পিঠের গল্পে শীতের বার্তা নিয়ে আসা তুষারপাত যেমন আনন্দের উপলক্ষ্য, তেমনি মুদ্রার ওপিঠের গল্পে রয়েছে দুর্ভোগের। তার ওপর নভেম্বর মাসে হানা দেয়া এই তুষার ঝড়ের অভিজ্ঞতাও দক্ষিণ কোরিয়ার বাসিন্দাদের কাছে নতুন। কারণ ১৯০৭ সালের পর এতো বেশি তুষারপাতের রেকর্ড নেই দেশটিতে।

স্থানীয় একজন বলেন, 'মৌসুমের প্রথম তুষার দেখে আমি খুশি এবং প্রচুর তুষারপাত হচ্ছে। যদি এই ধরনের আবহাওয়া চলতে থাকে, আমি মনে করি আমাকে আরও উষ্ণ পোশাক পরতে হবে।'

সিউলের এই তুষারপাত আবহাওয়া পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। যা অনেক বাসিন্দাকেই অবাক করেছে। আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণের জন্য পরিবেশ দূষণকে দায়ী করছেন সবাই।

স্থানীয় একজন বলেন, 'এই প্রথমবারের মতো আমি এই মৌসুমের তুষারপাত দেখছি এবং অবাক হয়েছি। মনে হচ্ছে আজকাল আবহাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করা অসম্ভব হয়ে উঠছে।'

দক্ষিণ কোরিয়ার একজন নাগরিক বলেন, 'এটি আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ। এর জন্য অন্যতম দায়ী পরিবেশ দূষণ। দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হিসেবে আমি পরিবেশ দূষণ কমানোর কাজে যুক্ত হতে চাই।'

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া অফিস। এতে ক্ষয়ক্ষতি ও ভোগান্তির বাড়ার শঙ্কায় সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তুষারঝড়ের কারণে প্রথমদিন বুধবারই দুই শতাধিক ফ্লাইট স্থগিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এমনকি প্রায় একশ' ফেরি চলাচল বন্ধ করে বন্দরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটও। এমনকি রাস্তাঘাট তুষারে ঢাকা পড়ায়, যান চলাচলেও ধীরগতি নেমে এসেছে। ঘটেছে দুর্ঘটনাও। এমন পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে তুষার সরানোর কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে।

একই সময় তুষারপাতে ধুঁকছে পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ চীনও। তুষারপাতে ঢাকা পড়ায় বুধবার ৯০টি হাইওয়েতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। মধ্য ও পূর্ব চীনের বেশিরভাগ অংশে তুষারঝড় কমে গেলেও, দেশটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বের মঙ্গোলিয়া এবং হেইলংজিয়াং-এ তাপমাত্রা কমে তুষারপাত আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ শীত শুরু হতে না হতেই বড় ধরনের শৈত্যপ্রবাহের মুখোমুখি অঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা।

চীনের হেইলংজিয়াং প্রদেশের হেগাং শহরে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) তুষারঝড় আঘাত হানতে শুরু করেছে। সোম-মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় ৫৪ মিলিমিটারের বেশি তুষারঝড় রেকর্ড করা হয়েছে। যা ২০১২ সালের ১১-১২ নভেম্বর পর্যন্ত হওয়া ৩৭ মিলিমিটার তুষারঝড়ের রেকর্ড ভেঙ্গেছে।

এসএস