১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শুক্রবার সকাল শুরু হয় দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রামসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ঘন কুয়াশা আর বিষাক্ত ধোঁয়ার মিশেলে বাতাসের মান ‘খুব খারাপ’, বায়ু মান সূচক ছিল ৩৭৩।
দিল্লিতে ২৪ ঘণ্টায় গড় বায়ুমান সূচক বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয় ৩৭১, যা একদিন আগেও ছিল ৪১৯। অর্থাৎ ধীরে হলেও কমছে ভারতের রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা। কিন্তু স্বস্তির সুযোগ নেই, কারণ বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ এখনও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় বহাল।
শীতের সময় বাতাস ধুলাময় হয়ে থাকে। ঘরে বসেও মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয় ধুলার জন্য। বিশেষ করে শিশু আর বয়স্কদের। ৫০-৬০ বছর পার করা মানুষগুলো দূষণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়।
দূষণের এই সমস্যা প্রতি বছর হয়। কিন্তু তাও এটি মোকাবিলায় কোনো শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। প্রতি বছর এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
স্কুল-কলেজ বন্ধ বলে বিপাকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। ট্রাক ও ডিজেল চালিত যান চলাচল সীমিতকরণ, নির্মাণকাজ বন্ধ, অফিস-আদালত সীমিত পরিসরে চালু রাখাসহ নানা ব্যবস্থা নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না দিল্লি প্রশাসন।
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাজ বলেন, ‘দিল্লিতে দূষণের মাত্রা যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার অনেক পদক্ষেপই নিয়েছে। দিল্লির সরকারি কর্মকর্তাদের অর্ধেকের বেশি বাড়ি থেকে কাজ করবেন। জরুরি সেবা বাদে সব খাতেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
গেলো কয়েক সপ্তাহে দিল্লির বাতাসে মানবদেহের জন্য বিপজ্জনক ক্ষুদ্র ধাতব কণা পিএম টু পয়েন্ট ফাইভের পরিমাণ বেড়ে নিরাপদ সীমার দেড়শ' গুণে পৌঁছায়। বিষাক্ত ধোঁয়াশা থেকে নিস্তার পেতে অবিলম্বে কার্যক্রমের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান পরিবেশবিদদের।
ভারতের পরিবেশবিদ মোহন জর্জ বলেন, ‘অনেক দেরি হয়েছে, অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এখন দরকার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য আছে। এই শহর, কার্বনের উৎস, ধারণক্ষমতা সব জানা। সবচেয়ে শক্তিশালী মনিটরিং নেটওয়ার্ক আছে। এখন দরকার শুধু কাজ শুরু করা।’
কার্বন নিঃসরণ, যানবাহন-কলকারখানা আর আগাছা পোড়ানো ধোঁয়ায় বাড়তি মাত্রা যোগ করে শীতের শুরুতে কম তাপমাত্রা আর ভারী বাতাস। এ কারণে দক্ষিণ এশিয়ার বড় অংশই বর্তমানে বিষাক্ত ধোঁয়ার কবলে।