এশিয়া
বিদেশে এখন
0

উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডার বিকল্প খুঁজছে ভারতীয়রা

হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের জেরে কানাডা-ভারত উত্তেজনা বাড়তে থাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করছেন ভারতের অনেক শিক্ষার্থী। কানাডা যাওয়ার প্রবণতা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে দাবি ভারতের অ্যাডুকেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রগুলোর। আয়ে ভাটা পড়ায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আয় কমার শঙ্কা রয়েছে কানাডার।

খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ভারতের দিকে অভিযোগের পাল্লা ভারি করছে কানাডা। এতে ঘটনার ১৭ মাসেও থামছে না নয়াদিল্লি-অটোয়া উত্তেজনা। বরং সময় যত গড়াচ্ছে দু'দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন আরও বাড়ছে।

এ অবস্থায় উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার পরিকল্পনা পুনঃবিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন ভারতের অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। অনেকে আবার কানাডা বাদ দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাদের একজন ভারতের উত্তর প্রদেশের ২২ বছর বয়সী তরুণ মনপ্রীত সিং। তার বাবা-মা এখন ইউরোপের কেনো দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।

দুই দেশের খারাপ সম্পর্কে হাজার হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কানাডা যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এখন হতাশায় রূপ নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর প্রভাবে ধুঁকতে শুরু করেছে ভারতের অ্যাডুকেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রগুলো। কারণ কানাডায় যেতে আগ্রহী একেকজন শিক্ষার্থীর যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ রুপি পর্যন্ত ফি নিতো প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই লাভের অংকে এখন অনেকটা ভাটা পড়েছে।

অথচ যুগের পর যুগ ধরে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা যেতে মরিয়া ছিলেন ভারতীয়রা। এমনকি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বিদেশে অধ্যায়নরত ১৩ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুধু কানাডাতেই রয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার। যা কানাডার মোট আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ৪১ শতাংশ। এরপরই উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পছন্দের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি।

ভারতীয় শিক্ষার্থীরা কানাডা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পেছনে দিল্লি-অটোয়া উত্তেজনা ছাড়াও, কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকেও দায়ী করছে এডুকেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রগুলো। আর এসবের জন্যই বর্তমানে কানাডা যাওয়ার প্রবণতা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে দাবি ভারতের এডুকেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রগুলোর। এর পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই এবং ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। আর এরজন্য তাদের আয়ের গতি মন্থর হয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে কানাডার মোট দেশজ উৎপাদনে তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলারের অবদান রেখেছিল বিদেশি শিক্ষার্থীরা। ভারতীয় শিক্ষার্থীরা যেই হারে কানাডা বিমুখ হয়ে পড়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী খাত থেকে হওয়া অটোয়ার আয়েও ভাটা পড়ার শঙ্কা বাড়ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

এসএস