এশিয়া
বিদেশে এখন
0

চিরতরে বন্ধ হচ্ছে ট্রাম, কলকাতাবাসীর মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

আধুনিক ও গতির যানবাহনের স্রোতে জৌলুস হারিয়েছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী গণপরিবহন ট্রাম। দেড়শ' বছরের বেশি সময় ধরে যাত্রী পরিবহন সেবা দিয়ে আসা ট্রামকে চির বিদায় জানানোর ঘোষণাও দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। এতে এখন ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে যাচ্ছে কলকাতার রাজপথের গর্বের এ যানটি। ফলে ট্রাম নিয়ে হাজারও স্মৃতি থাকা কলকাতাবাসী মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

১৮৭৩ সালে ছিল না দ্রুত গতির ক্যাব কিংবা মেট্রো। চলার বাহন হিসেবে রাস্তায় ছিল শুধুই টানা রিকশা। ঠিক তখনই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যাত্রা পথে গতি আনতে শুরু হয়েছিল গণপরিবহন ট্রামের যাত্রা।

সেই থেকে দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে পরিবহন সেবা দিয়ে কলকাতার গণপরিবহন খাতে এক ঐতিহ্যের নাম ট্রাম। অথচ বর্তমানে আরও বেশি আধুনিক ও গতির যানবাহনের স্রোতে জৌলুস হারিয়েছে কলকাতার রাজপথের গর্বের এই যানটি। কাঁধে চেপেছে ট্রাফিক জ্যামসহ জনদুর্ভোগের বেশ কয়েকটি দায়। আর এ কারণেই কলকাতার সড়ক থেকে চিরতরে ট্রাম তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

দিন- তারিখ এখনও ঠিক না হলেও, হাজারও স্মৃতিমাখা এই যানটির যে চিরবিদায় ঘণ্টা বেজে উঠেছে তা চূড়ান্ত। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে যাচ্ছে ভারত তথা এশিয়ার প্রথম ট্রাম পরিবহন ব্যবস্থার। তবে নিজেদের আবেগ, ঐতিহ্য, ভালোবাসার ট্রামকে বিদায় দেয়ার খবরে মন খারাপ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের।

স্থানীয় একজন বলেন, 'এটা তো ঠিক না। এটা অনেক ভালো একটা যান। আর এই যান তো পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে। এটাতে অনেক অসুস্থ লোক সহজে যাতায়াত করে। বন্ধ করে না দিয়ে সীমিত একটা জায়গায় রাখা যায়, স্টপেজ কমিয়ে দেয়া যায়। ভালো লাগবে যে এটা আমাদের পুরোনো ঐতিহ্য, আবেগ।'

যাত্রার শুরুতে শিয়ালদা থেকে আরমিনিয়ান ঘাট পর্যন্ত প্রথম ছুটেছিল ঘোড়ায় টানা ট্রাম। ধীরে ধীরে সেই ট্রাম হয়ে উঠেছে কলকাতার অন্যতম এক পরিচিত নাম। ১৯০২ সালে বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলাচল শুরু হয় ট্রামের। বিশেষ এ যানটি ঘিরে কলকাতায় পর্যটন আকর্ষণও বাড়তে থাকে।

তথ্য বলছে, ২০১১ সালের ৩৭টি রুটে ট্রাম চললেও কমতে কমতে বর্তমানে তা নেমে এসেছে তিনটি রুটে। অবশেষ একেবারেই যে বিদায় বিদায় জানানোর পালা এলো। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের নেয়া এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী গণপরিবহন ট্রামকে বাঁচাতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ক্যালকাটা ট্রাম উইজার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এসএস