কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যজুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরমধ্যে ১০ দিন ধরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনেই অনড় অবস্থানে ছিলেন তারা।
বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব মনোজ প্যান্টের সঙ্গে বৈঠকের পর অবশেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে সম্মতি জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এসময় নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার ১০ নির্দেশনা জারি করেন মুখ্যসচিব। এরমধ্যেই রয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের ৫ দফা দাবি।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মধ্যে একজন জানান, আমাদের সেখানে যা যা দাবি ছিল সেই দাবির সমস্তটাই আমরা চিফ সেক্রেটারির কাছে রাখি এবং তারা কিছু পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছে।
এরপরই কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, ন্যায়বিচার আর দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শনিবার থেকে শুধু জরুরি বিভাগে সেবা দেবেন তারা। পাশাপাশি শুক্রবার স্বাস্থ্যভবন থেকে মহার্যালি বের করে এখানকার ১০ দিনের অবস্থান কর্মসূচি শেষ করবেন তারা। এই র্যালি শেষ হবে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের সামনে।
আমাদের এই ন্যায় বিচারের আন্দোলন তার সাথে জনগণের আন্দোলন তা কিন্তু জনগণের একটা দাবিকে ছিনিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। আর এটা আমাদের আন্দোলনের একটা আংশিক জয় বলেও জানান আন্দোলনরত চিকিৎসক।
তবে এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, দেশের দক্ষিণবঙ্গে ভয়াবহ বন্যার কারণে সরকারকে সেখানে গুরুত্ব দেয়ার সুযোগ দিতেই কাজে যোগ দিচ্ছেন তারা। তবে হাসপাতালে তারা বহির্বিভাগে কোন সেবা দেবেন না।
জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে আরো একজন বলেন, 'বন্যার কবলে পরে যারা মেডিকেলে ঠিকমত রিচ করতে পারছে না সেই জায়গা থেকে আমাদের সময় এসেছে মানুষ যেমন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল তেমনি তাদের পাশে দাঁড়ানো।'
এর আগে রাজ্য সরকারকে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে ৭ দিনের সময় বেঁধে দেয় জুনিয়র চিকিৎসকরা। গেলো ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভে উত্তাল পুরো রাজ্য। তদন্তভার সিবিআই নিলেও এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুইজন। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর।