মেঘ থমথমে আকাশ। উপকূলে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। সুপার টাইফুন 'ইয়াগি'-এর প্রভাব কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কাটেনি হংকংবাসীর। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় প্রবেশে এখনও জারি আছে নিষেধাজ্ঞা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেহাল অবস্থা শেয়ার বাজারের। আশঙ্কার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও, আতঙ্কে দিন পার করছেন উপকূলীয় শহরের বাসিন্দারা।
স্থানীয় একজন বলেন, 'টাইফুনটি হংকং-এ সরাসরি আঘাত হানেনি। বাতাসের বেগ টাইফুন মাংখুতের মতো অতটা তীব্র ছিল না। তারপরও বাতাসের শব্দে রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাতাসের বেগ কম থাকায় এই অঞ্চলে ঝড়ের আঘাত তেমন তীব্র ছিল না। সংবাদপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল।'
এর আগে, উপকূলীয় এলাকায় তৃতীয় সর্বোচ্চ আট মাত্রার ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। শুক্রবার দুপুরে তা তুলে নেয়ার কথা রয়েছে। দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার ৭৭৮টি ফ্লাইট অবতরণ ও উড্ডয়নের সুযোগ পেয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার, বৈরি আবহাওয়ার কারণে অর্ধশতাধিক ফ্লাইট বাতিল করে হংকং।
এদিকে, ফিলিপিন্স ও হংকং-এর পর এবার চীনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে সুপার টাইফুন ইয়াগি। বৃহস্পতিবার ঘণ্টায় ৬১০ কিলোমিটার বেগে গুয়াংডং প্রদেশের দিকে যাত্রা শুরু করে টাইফুনটি।
বিবিসি'র তথ্য বলছে, শুক্রবার দিনের শেষভাগে ঝড়টি চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় পর্যটন নগরী হাইনানে আঘাত হানতে পারে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রাখা হয়েছে ট্রেন ও নৌ চলাচল। বাতিল করা হয়েছে বেশকিছু ফ্লাইট। ফিলিপিন্সে আঘার হানার পর টাইফুনটি দুর্বল হয়ে পড়লেও বর্তমানে ঝড়টি দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে চীনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা গেছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঝড়ের গতিবেগ না কমলে দেশটির সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ গুয়াংডং ও হাইনান শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এরই মধ্যে, জরুরি খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে হাইনানের উপকূলে ভিড়তে শুরু করেছে বেশ কিছু মাছ ধরার নৌকা। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সিসিটিভির প্রতিবেদনে দেখা যায়, পানি, প্রক্রিয়াজাত নুডলস, কম্বলসহ নানা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জড়ো করা হচ্ছে টাইফুন সেল্টারগুলোতে। উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন পেশায় জড়িতদেরকে অবিলম্বে বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগি যদি পূর্ণ শক্তি নিয়ে চীনে আঘাত হানে তাহলে আরও একটি মারাত্মক বিপর্যয়ের সাক্ষী হবে দেশটি।
গেল সপ্তাহে টাইফুন ইয়াগির ভয়ংকর তাণ্ডব দেখে ফিলিপিন্স। ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বন্য ও ভূমিধসে প্রাণহানি হয় ১৩ জনের। বন্যার কারণে রাস্তাঘাট, দোকানপাট এমনকি বসতবাড়ির ভেতর এখনও কাদামাটির স্তর জমে থাকায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।