এশিয়া
বিদেশে এখন
0

বন্যায় বিপর্যস্ত দার্জিলিং,আসাম, ত্রিপুরা-তেলেঙ্গানা

রাতভর বৃষ্টির আকস্মিক ঢলে বিপর্যস্ত হয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং। ৪৫ মিনিটের টানা বৃষ্টিতে অচল হয়ে গেছে আসাম। ত্রিপুরায় গোমতী নদীতে পানির উচ্চতা কমতে শুরু করলেও দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। তেলেঙ্গানাতেও বন্যার পানি কমছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, নেই বিশুদ্ধ পানি। দুই দশকের ভয়াবহতম বন্যা চলছে অন্ধ্র প্রদেশেও।

গতকাল (মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। ভয়াল রূপ নিয়েছে বালাসন নদীও। দিন শেষে রাতেও কমেনি বৃষ্টি। নদীগুলোতে পানির উচ্চতা এতোটাই বেড়ে গিয়েছে নদীর পানি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে কার্শিয়াং শহরের ভেতরে ঢুকতে শুরু করেছে। তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে যানবাহন, বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। পানি ঢুকে গেছে বহু ঘরবাড়িতে। একই পরিস্থিতি কালিম্পংয়েও। জাতীয় সড়কে ধস নেমে বন্ধ হয়ে গেছে সিকিমের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ।

একইদিন রাতে টানা ৪৫ মিনিটের মুষলধারে বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে আসামে। বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি মেঘালয়কে যুক্ত করা আসামের জোরাবাতও প্লাবিত। ক'দিন আগে গুরুতর বন্যার শিকার ত্রিপুরায় বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি পরিদর্শন ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন রাজ্যের শীর্ষ নেতারা।

গেলো জুন থেকে এ পর্যন্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ছয় রাজ্যে বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণ গেছে অন্তত ২০০ মানুষের। চলতি সপ্তাহে শুধু দক্ষিণাঞ্চলের দুই রাজ্যে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে জোরেসোরে চলছে ত্রাণ কার্যক্রম। আরও বৃষ্টির শঙ্কায় তেলেঙ্গানার ১১ জেলায় জারি রয়েছে রেড অ্যালার্ট। গেলো দু'দিনে সরকার পরিচালিত শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষকে। দুই দশকের ভয়াবহতম বন্যার কবলে অন্ধ্র প্রদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বিজয়বাড়া। শহরের ৪০ শতাংশ এলাকায় বুদামেরু নদীর পানিতে প্লাবিত। পানিবন্দি পৌনে তিন লাখ মানুষ। বন্যা পরবর্তী সংকট নিরসনে ব্যস্ত গুজরাটও।

এদিকে, প্রতিবেশি পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমেও গেলো দু'দিনে বন্যায় প্রাণ গেছে বেশ কয়েকজনের। বন্যাকবলিত বেলুচিস্তানে পানির নিচে অর্ধশত গ্রাম ও মহাসড়ক। জুলাই থেকে দুই মাসে পুরো পাকিস্তানে বৃষ্টি-বন্যা-ভূমিধসে প্রাণ গেছে ৩০০ এর বেশি মানুষের, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর।

জুন থেকে সেপ্টেম্বরে বর্ষা মৌসুমে ভারত ও পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর দুর্যোগ বেড়ে চলার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২২ সালে টানা বৃষ্টি-বন্যায় ডুবে গিয়েছিল পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ, ১ হাজার ৭০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু এবং তিন হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছিল দেশটি।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর