ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা রাজ্যে শুক্রবার শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টি এখনো অব্যাহত। অবিরাম বৃষ্টিতে আগ্রাসী রূপ নিচ্ছে বন্যা ও ভূমিধস পরিস্থিতি। বন্যার পানির ভয়াবহ স্রোতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাট, সেতু-কালভার্ট ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি জনজীবনে বাড়ছে বিপর্যয়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাণহানি। খোঁজ মিলছে না অনেকেরই।
তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঝুঁকি বিবেচনায় সোমবার বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উদ্ধার তৎপরতায় চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থার ২৬টি দল। এখন পর্যন্ত দুই রাজ্যের বন্যা কবলিত উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত দুই রাজ্যে ১৪০টির বেশি ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শতাধিক ট্রেনের রুটে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে ৬ হাজারের বেশি যাত্রী আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। বন্যাদুর্গতদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও খাবার বিতরণে প্রতিদিন এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। এরই মধ্যে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই কেন্দ্র থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে 'প্রবল' বৃষ্টিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থায় গেল মধ্যরাতে, এলাকাটির প্রকাশম ব্যারেজ থেকে সাড়ে ১০ লাখ কিউসেকের বেশি বন্যার পানি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।
এদিকে ২৫ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টির পর ২ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গুজরাটে আবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রাণহানি আরও বাড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণ এবং মধ্য গুজরাটে জারি রাখা হয়েছে ইয়েলো অ্যালার্ট। অন্যদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ত্রিপুরা রাজ্যের অনেক এলাকায় দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। রাজ্যটিতে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।