এশিয়ার চার দেশে বন্যা-ভূমিধস, ১১৫০ জনের প্রাণহানি

বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত ইন্দোনেশিয়ার একটি অঞ্চল
বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত ইন্দোনেশিয়ার একটি অঞ্চল | ছবি: এপি
0

বন্যা ও ভূমিধসে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ৪ দেশে প্রাণ গেছে প্রায় ১ হাজার ১৫০ জনের । এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৬০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে। এখনও নিখোঁজ প্রায় ৫০০ বাসিন্দা। বন্যা কবলিত থাইল্যান্ডে প্রাণহানির সংখ্যা অন্তত ১৭৯। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার তাণ্ডবের পর শ্রীলঙ্কায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৫৫ জনের। আর, ভারতের চেন্নাইতে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া চলে গেছে এক সপ্তাহ। তবে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের চিহ্ন দেশটি জুড়ে। রাতারাতি সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় ৫ লাখ লঙ্কান। জরুরি অবস্থা জারির ৩ দিন পর এখনও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার করা হচ্ছে দুর্গতদের। খোঁজ নেই সাড়ে ৩ শ’র বেশি মানুষের। শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিতি গেল এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ- বলছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর।

একজন জানান, এ দুর্যোগে অন্তত ২৫টি অঞ্চল সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা পুনর্গঠন করার সময় এটা। আমাদের এ বিপর্যয় থেকে বাঁচতে হবে এবং আবারও জনগণকে রুখে দাঁড়াতে সাহায্য করতে হবে।

আশ্রয়কেন্দ্রে সরানো হয়েছে বন্যা কবলিত প্রায় ২ লাখ বাসিন্দাকে। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক লাখ লঙ্কানের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে পাকিস্তানের এইড ফ্লাইটগুলোকে ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। দেশজুড়ে জারি আছে জরুরি অবস্থা।

শ্রীলঙ্কার পর ভারতের তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া কম শক্তি নিয়ে আঘাত হানলেও ক্ষয়ক্ষতি কম নয়। ভারী বৃষ্টিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার ফসলি জমি। চেন্নাইতে এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এদিকে, দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ ইন্দোনেশিয়াও মৌসুমী বৃষ্টি আর ভূমিধসে রাতারাতি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সুমাত্রা দ্বীপে ৬ শ’র বেশি মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি এখনও সন্ধান মেনেনি অন্তত ৫০০ জনের। সপ্তাহ ধরে চলমান এই দুর্যোগে আহত হয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ বাসিন্দা। আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বাস্তুহারা অন্তত ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষকে।

একই পরিস্থিতি থাইল্যান্ডেও। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় সঙ্খলা প্রদেশে এখনও পানিতে ডুবে আছে অধিকাংশ সড়ক ও নিচুভবন। প্রায় ১২ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। আগামী এক সপ্তাহের আগে এই বন্য পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন থাই প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল।

আগামী বছর জানুয়ারি শেষ সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় বন্যাকবলিতদের সহায়তায় সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ করছেন বিরোধীরা।

খুব বেশি প্রাণহানি না হলেও বন্যায় বিপর্যস্ত মালয়েশিয়ার প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি পরিবার। কয়েকটি অঞ্চলে পানি নেমে গেলেও এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে বেশ কয়েকটি নদীর পানি। বাঁধ প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে।

এএইচ