এই রকম জামা, চুল কাটার ধরনও এক। দেখতে সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ মনে হলেও দেশ থেকে সামরিক বাহিনীকেই হঠাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন শতাধিক তরুণ তুর্কি।
গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতায় বসে দেশটির সামরিক বাহিনী। দেশকে সামরিক শাসন থেকে মুক্ত করতে প্রতিনিয়তই বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমনই একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বামার পিপলস লিবারেশন আর্মি- বিপিএলএ। যা গঠিত হয় সামরিক অভ্যুত্থানের মাত্র ২ মাসের মধ্যে।
গেল অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বিদ্রোহীদের সশস্ত্র অভিযান - অপারেশন ওয়ান জিরো টু সেভেনের অন্যতম অংশীদার বিপিএলএ। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দিন দিন কোণঠাসা হচ্ছে জান্তা সরকার। গুরুত্বপূর্ণ মায়াবতী শহরসহ এইমধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকার দখল নিয়েছে বিপিএলএ সহ অন্য বিদ্রোহীরা।
সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে বামার পিপলস লিবারেশন আর্মির সফলতার অন্যতম প্রভাবক নিয়মানুবর্তিতা। তিন মাসের প্রশিক্ষণকালে নতুন যোদ্ধাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তিতে দেয়া হয় সর্বোচ্চ জোর। এসময় মুঠোফোন ব্যবহারে থাকে নিষেধাজ্ঞা। ভোর ৪টা থেকে এক ফোঁটা পানি পান না করেই চলে টানা ১৭ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ। যা তরুণদের তৈরি করে দৃঢ় প্রত্যয়ী হিসেবে।
বিপিএলএ ,ডেপুটি পলিটিক্যাল অফিসার টেট ওয়াই লিন বলেন, 'আমাদের সেনারা অনেক প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় ছিনিয়ে আনতে প্রস্তুতির জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ওদের সাহস, শক্তি ও মনোবল আমাকে শিহরিত করে।'
আমাদের সেনারা অনেক প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় ছিনিয়ে আনতে প্রস্তুতির জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ওদের সাহস, শক্তি ও মনোবল আমাকে শিহরিত করে।
৭৬ বছরের স্বাধীন মিয়ানমারে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় জান্তা সরকার। তবে এবারের মতো কখনোই এতোটা সংকটে পড়েনি সামরিক বাহিনী। বিশ্লেষকদের দাবি, বছরের পর বছর ধরে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণে অস্ত্র হাতে সেনা সরকার উৎখাতে যুদ্ধে নেমেছেন সাধারণ জনগণ।
মিয়ানমার বিষয়ক স্বাধীন বিশ্লেষক ডেভিড স্কট ম্যাথিসন বলেন, 'প্রথমদিকে জনগণের আন্দোলন ছিলো শান্তিপূর্ণ ও উদ্ভাবনী। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এমন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলেছে। কিন্তু সামরিক সরকার যখন হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠলো তখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছে সাধারণ জনগণ।'
প্রথমদিকে জনগণের আন্দোলন ছিলো শান্তিপূর্ণ ও উদ্ভাবনী। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এমন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলেছে। কিন্তু সামরিক সরকার যখন হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠলো তখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছে সাধারণ জনগণ।
গেল সাড়ে ৩ বছরে জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে বামার পিপলস লিবারেশন আর্মির ২০ জনের বেশি সেনা।