২২ এপ্রিল রাজস্থানের বান্সওয়ারাতে এবারের অন্যতম বিতর্কিত মঙ্গলসূত্রের বক্তব্য উপস্থাপন করেন মোদি। অভিযোগ করেন ক্ষমতায় আসলে হিন্দুদের সম্পদ মুসলিমদের মাঝে বন্টন করবে কংগ্রেস। এই আসনটিতেও ইন্ডিয়া জোটের কাছে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী।
উত্তর প্রদেশ বা রাজস্থানে ইন্ডিয়া জোটের কিছুটা প্রভাব থাকলেও বিজেপি ধরা ছোঁয়ার একেবারে বাইরে ছিল গুজরাটে। রাজ্যটির বানাসকাঠা আসনেও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ফলস্বরূপ ১০ বছর পর গুজরাটে নিজেদের প্রথম আসন পেয়েছে কংগ্রেস।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১০৩টি আসনে জনসভা করেন নরেন্দ্র মোদি। যার মধ্যে বিজেপি জয় পায় ৮৬টি আসনে। সফলতার হার ৮৫ শতাংশ। ঠিক ৫ বছর বাদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জনসভা করেন ১৬৪টি আসনে। যেখানে পুরো এনডিএ জোট মিলে জয় পায় মাত্র ৮৭টি আসনে। সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নিয়েও মোদির সফলতার হার মাত্র ৫৩ শতাংশ।
এবার আসা যাক রাহুল গান্ধীর প্রসঙ্গে। পাপ্পু ও শাহজাদা বলার মাধ্যমে বিজেপি ক্রমাগত তীরবিদ্ধ করলেও ভোটের ফল বলছে ভিন্ন কথা। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত দেশের ৭১টি আসন ঘুরে 'ভারত জোড়ো' যাত্রা করেন রাহুল গান্ধী। ২০১৯ সালে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা জয় পান মাত্র ১৯টি আসনে। পদযাত্রার পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ এ। অন্যদিকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় কংগ্রেসের নেতা ঘুরে বেড়ান ৮২টি আসনে। ২০১৯ সালে মাত্র ৬টি আসনে জয় পায় ইন্ডিয়া জোট। আর এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫শে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, স্থানীয় সমস্যাগুলোর বদলে জনসভায় সাম্প্রদায়িকতাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থা- আরএসএসের সঙ্গে মনোমালিন্যের বিষয়টিও কারও অজানা নয়। দলের চেয়ে নিজেকে বড় করে তোলায় অনেকটা একনায়কতন্ত্রের স্বাদ পাচ্ছিলেন ভারতীয়রা। তাই এবারের নির্বাচনে মোদি ম্যাজিক ম্লান ছিল অনেকটাই। অন্যদিকে পদযাত্রার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে যুক্ত হবার কারণে সাধারণ ভোটারদের মন জয় করতে পেরেছেন রাহুল গান্ধী।