এশিয়া
বিদেশে এখন

জোট গঠনে বাদ পড়েছে জম্মু-কাশ্মীরের তিন আসন

তৃতীয়বারের মতো ভারতের ক্ষমতায় আসার চেষ্টায় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। লোকসভা নির্বাচনে ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে দলটি প্রার্থী দেয়ার পাশাপাশি জোট গঠন করলেও জম্মু-কাশ্মীরের তিনটি আসন বাদ পড়েছে। আর কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ উপত্যকাবাসী।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে আঁটসাট বেধে নেমেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশা ভারতজুড়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ৪০০ আসনের গণ্ডি পার করবে। অথচ কাশ্মীরের তিনটি আসনেই কোনো প্রার্থী দেয়নি দলটি।

গত তিন দশক ধরে হিমালয়ের কোল ঘেঁষে চলছে বিদ্রোহ। বিজেপির অভিযোগ, স্বায়ত্তশাসনের কারণে সে সময়ের সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলো না। তাই ২০১৯ সালে সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রের অধীনে নিয়ে আসে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও সিদ্ধান্তের বৈধতা মেলে। নরেন্দ্র মোদির দাবি, এর ফলে কয়েক দশকের চলমান রক্তপাত বন্ধ হয়েছে।

তবে উপত্যকায় এখনও সংঘাত পুরোপুরি থামেনি। পাশাপশি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান হয়নি। সরকারের সিদ্ধান্তের পর কয়েকমাস ধরে রাজ্যের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীসহ কয়েকশ’ রাজনৈতিক নেতাকে আটকে রাখা হয়। সব ধরনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

কাশ্মীরের বাসিন্দারা বলেন, ‘পরিবর্তন আসবে। আমাদের নিজস্ব সরকার আসলেই পরিবর্তন শুরু হবে। আমরা নিজেদের প্রতিনিধিদের দিয়ে সরকার চালাবো।’

একজন বলেন, ‘কাশ্মীরের উন্নয়নের জন্য ভোট দেবো। এখন সবকিছুই হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে গেছে। আমরা চাই রক্তপাত বন্ধ হোক, এজন্যই আমরা ভোট দিবো।’

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল প্রসঙ্গে একজন বলেন, ‘৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে মোদি অপরাধ করেছেন। যদি তিনি এই কাজটি না করতেন, সবাই তাকে ভোট দিতো।’

১৯৯৬ সাল থেকে উপত্যকাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছে বিজেপি। অনুচ্ছেদ বাতিলের পরও দুটি অঞ্চলের ৫টি আসনে ২০১৯ সালে প্রার্থী দেয় ক্ষমতাসীন দল। যদিও লাদাখের দুটি আসনে জয় পেলেও বিজেপিকে জম্মু ও কাশ্মীরের তিনটি আসনেই হারের মুখোমুখি হতে হয়। বিশ্লেষকদের ধারণা, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটিতে বিজেপির প্রতি জনগণের প্রবল ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভকে গণভোটে রূপান্তরিত হওয়া ঠেকাতেই জম্মু ও কাশ্মীরে প্রার্থী দেননি নরেন্দ্র মোদি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক শেখ শওকত হোসেন বলেন, ‘বিজেপির জয়যাত্রা যদি মোদির সাফল্যের গল্প হয়, তাহলে তাদের এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত ছিলো। জনগণের ম্যান্ডেট নেয়া জরুরি ছিলো। তবে এখানে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে তারা শঙ্কিত।’

তবে বিজেপি বলছে, প্রার্থী না দেয়ার সিদ্ধান্তটি দলের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। উপত্যকায় জনগণের জন্য কাজ করবে, এমন প্রার্থীকে সমর্থন দিবে দল। এদিকে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে যোগ দিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান দুটি দল- ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর