এরইমধ্যে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপির সঙ্গে জোট গঠনে রুদ্ধদার বৈঠক করেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ। রাজনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে নীতিগতভাবে ঐক্যমতে পৌঁছানোর দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আসনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে চায় পিপিপি। তবে ক্ষমতার মসনদে থাকতে প্রধানমন্ত্রী পদ নিজেদের কাছে রাখার ইচ্ছা নওয়াজ শরীফদের। তাই পিপিপিকে দেশের প্রেসিডেন্ট, জাতীয় পরিষদের স্পিকার ও সিনেটের চেয়ারম্যান পদ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে পিএমএল-এন।
নির্বাচনের আগে ভোট পেতে ৩শ' ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি। অন্যদিকে, ২শ' ইউনিট বিনামূল্যে এবং সার্বিকভাবে দাম ২০-৩০ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয় পাকিস্তান মুসলিম লীগ। এই দুই দল জোট করলে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশটির এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া আইএমএফের লোন পেতে সংস্থাটির শর্ত বাস্তবায়ন নিয়েও জটিলতা বাড়বে।
এদিকে ক্ষমতার নাটাই অন্য কারো হাতে ছাড়তে চায় না ইমরান খানের দল পিটিআই। কারণ নির্বাচনী ফলাফলে সবচেয়ে বেশি ৯৩টি আসনে জয় পেয়েছে তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে আইনি জটিলতায় নিজেদের প্রতীক নিয়ে পিটিআই সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় জোট গঠনে তাদের পথটা কঠিন হয়ে উঠছে।
এরমধ্যেই ভোট কারচুপির অভিযোগে ফুঁসছে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। আর আন্দোলন ঠেকাতে ব্যাপক ধরপাকরও চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সবচেয়ে বেশি আটক করা হচ্ছে ইমরান খানের দল পিটিআই-এর নেতা-কর্মীদের। এছাড়া ইমরান খান ও অন্যান্য কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিও প্রবল হচ্ছে।
আন্দোলনকারিরা বলছে, পিটিআই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেছে। কিন্তু ভোট চুরি করে কম আসন দেয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে তারা বলেন, 'আমাদের বিক্ষোভ সেই শক্তির বিরুদ্ধে যারা জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করেছে। এটা সেইসব শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যারা জনমতকে অগ্রাহ্য করে। তারা তাদের সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়।'
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সংকট সমাধানের পথ উন্মুক্ত হওয়ার বদলে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। এ অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছয় মাসে যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে তা নতুন সরকার ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।