৭ সপ্তাহ ধরে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ভারতের পেঁয়াজ চাষিদের। প্রতিকূল আবহাওয়ায় শস্য নষ্ট ও আশানুরূপ চাষাবাদ না হওয়ায় আগেই চরম দুর্দশায় পড়তে হয়েছে কৃষকদের। তার ওপর অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপে বিপাকে লাখো কৃষক।
সিএনবিসি'র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এ বছর ভারতের পেঁয়াজচাষিদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনেনি। সরকারি বিধিনিষেধের কারণে ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন না আগে থেকেই ক্ষতির মুখে থাকা কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
গত বছর আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। এরপর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে দেয়া হয় পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা যা কার্যকর থাকবে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত। খুচরা বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নয়া দিল্লির দাবি খারিজ করে কৃষকরা বলছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থ।
পেঁয়াজ রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে শীর্ষ ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ সালে ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের এ নিত্যপণ্য রপ্তানি করেছে দেশটি; ২০২১-২২ বছরে যা সোয়া আট কোটি এবং ২০২২-২৩ সালে ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি ছিল। কিন্তু ২০২৩-২৪ সালে আট মাসই বিধিনিষেধের কারণে চলতি অর্থবছরে অনেকটা কমে যাবে পেঁয়াজ থেকে রপ্তানি আয়।
এমন পরিস্থিতিতে শঙ্কিত পেঁয়াজচাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরাও। যে সময়ে এসব বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, তাও ছিল বেশ স্পর্শকাতর। কারণ বিশ্ববাণিজ্যে চুক্তি নবায়নের সময় জানুয়ারিতে হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে আটকে গেছেন ব্যবসায়ীরা।
এর ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার জেরে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালয়েশিয়াসহ ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল প্রতিবেশি দেশগুলোতেও দাম বেড়ে গেছে পচনশীল এ পণ্যের। ফলে এই দেশগুলো বিকল্প বাজারের খোঁজ পেলে এবং মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক ক্ষতি এবং জীবিকা উপার্জন বন্ধের ভয় গ্রাস করেছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশি পাকিস্তান আর চীন লুফে নিয়েছে বিশ্ববাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের শূন্যস্থান পূরণের সুযোগ।
এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষতি গুণতে হয়েছে পেঁয়াজচাষিদের, সে হিসাব করতে এখনও বসেনি নয়া দিল্লি। ওদিকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মার্চ, আগস্ট আর ডিসেম্বরের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন কৃষকরা। বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, শুধু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ১০ হাজার কোটি রুপির ক্ষতি গুণতে হতে পারে পেঁয়াজচাষি ও ব্যবসায়ীদের।