জেন-জিদের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল মেক্সিকো

বিক্ষোভকারী ও পুলিশদের সংঘর্ষ
বিক্ষোভকারী ও পুলিশদের সংঘর্ষ | ছবি: সংগৃহীত
0

এবার জেন-জিদের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল মেক্সিকো। অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, সরকারের দুর্নীতি-অনিয়ম ও ভঙ্গুর বিচার ব্যবস্থা- এসব কারণে গতকাল (শনিবার, ১৫ নভেম্বর) রাজধানীতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা। এসময় প্রেসিডেন্টের বাসভবন ভাঙচুর করতে গেলে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে গিয়ে আহত হয় শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। আটক করা হয় ২০ বিক্ষোভকারীকে। এদিকে, ‘ডে অব দ্যা ডেড’ ফেস্টিভালে মিচোয়াকানের মেয়র নিহত হওয়ার জেরে জেনজিদের এ বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বিরোধীদলের সমর্থকরা।

মেক্সিকো সিটির ন্যাশনাল প্যালেস। নিরাপত্তা জন্যে রাখা লোহার বেষ্টনী উপড়ে ফেলার চেষ্টা করছে জনতা। ব্যারিকেড তুলে লাঠি চার্জ করেও ছত্রভঙ্গ করা যাচ্ছে না বিক্ষোভকারীদের। কাঁদানে গ্যাস আর স্মোক বোমার ধোঁয়ায় ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে চারপাশ। হেলমেট, মুখোশ কিংবা রুমালে মুখ ঢেকে পুলিশকে পাল্টা ধাওয়া করছে জেনজি-রা।

গত শনিবার মেস্কিকোর রাজধানীতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে এভাবেই বিক্ষোভ করেন দেশটির সাধারণ মানুষ। যার নেতৃত্ব দিয়েছে জেন জি। ক্লাউডিয়া শেনবাউমের প্রশাসনের দুর্নীতি, অপরাধ দমনে নিষ্ক্রিয়তা আর পক্ষপাতদুষ্ট বিচার ব্যবস্থার প্রতিবাদে এদিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। গন্তব্য ছিল শেনবাউমের বাসভবন।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘তরুণরা আজ ক্লান্ত। ন্যায় বিচার চাই বলেই রাজপথে নেমেছি। আমাদের সন্তানদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুরক্ষিত ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ চাই।’

অন্য আরেকজন বলেন, ‘তরুণরাই রাজনীতির ভবিষ্যৎ। আমরা দেখছি, সরকার আমাদের যুক্তিসংঘত এ আন্দোলনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে। ক্ষমতার বাইরে থেকেও আমরা পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখি।’

তবে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ ছাড়াও এই বিক্ষোভে যোগ হয়েছে ডে অব দ্য ডেড ফেস্টিভালে মিচোয়াকানের মেয়র কার্লোস মাঞ্জোর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার হওয়ার ঘটনা। চলতি মাসের শুরুতে নিহত হওয়া এই মেয়র সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর জেরে জেন-জিদের এ সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সামিল দেশের বিরোধীদলগুলো। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সেখানে জড়ো হয়েছেন দলের সমর্থক ও কর্মীরা।

আরও পড়ুন:

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘যেখানে সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছি। আজকে আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হলো তা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়।’

অন্য আরেকজন বলেন, ‘এখন আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকার যদি কোনো পদক্ষেপ না নেয়, আমরা জাতীয় ধর্মঘট ডাকতে পারি।’

এছাড়াও, শনিবারের এ বিক্ষোভে সামিল হন মেক্সিকান শিক্ষকরা। শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়াও শ্রম ও শিক্ষা খাতে সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নামলে তাদের সঙ্গেও সংঘাতে জড়ায় দাঙ্গা পুলিশ।

প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ক্লডিয়া শেনবাউম। ফেন্টানল মাদকের চোরাচালানের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচন করেন তিনি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের মনজয় করা গেলেও নিজ দেশে অপরাধ দমনে ব্যর্থ শেনবাউম-অন্তত বিক্ষোভকারীরা এমনটাই বলছেন।

এফএস