ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন!

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিকোলাস মাদুরো
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিকোলাস মাদুরো | ছবি: সংগৃহীত
0

ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন সমরাস্ত্র মজুতের জের ধরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে। এরইমধ্যে ১০টি যুদ্ধজাহাজ, এমকিউ নাইন-রিপার ড্রোন, এফ থার্টিফাইভ-স্টেলথ যুদ্ধবিমানসহ অত্যাধুনিক সব সামরিক হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে ওয়াশিংটন। এছাড়াও সাড়ে ৪ হাজার সেনাও পাঠিয়েছে তারা। একে চিরন্তন যুদ্ধ বলছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তবে কি কারাকাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন বলে দাবি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে এবার প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে পড়েছেন ভেনেজুয়েলার প্রতি।

গেলো আগস্ট থেকেই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার জাহাজ ও সাবমেরিনে ১০ বার হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে নিহত হয়েছেন অর্ধশত মানুষ। ধ্বংস করেছে একাধিক নৌযান। আর এই অভিযান পরিচালনা করছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাউথকম। যার সদর দপ্তর ফ্লোরিডার ডোরালে।

ভেনেজুয়েলায় হামলার পাশাপাশি এর অভ্যন্তরে মার্কিন তদন্ত সংস্থাকে অভিযানের নির্দেশও দেয় হোয়াইট হাউস। সেই সঙ্গে ইঙ্গিত দেন যেকোন সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিযান চালাতে পারে দেশটির মাদক কেন্দ্রে।

আরও পড়ুন:

এবার সত্যি সত্যি ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে অভিযানের কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। যেখানে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ কোকেন কারখানা লক্ষ্য করে হামলা চালাবে মার্কিন সেনারা। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার এই টানটান উত্তেজনার মধ্যে ক্যারিবীয় সাগরে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা দিন দিন বাড়িয়েই চলেছে ওয়াশিংটন। জড়ো করছে ভারী সব সমরাস্ত্র।

ইতিহাসে এই প্রথম লাতিন আমেরিকায় এতো বিপুলসংখ্যক যুদ্ধাস্ত্র ও সেনা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে রয়েছে ১০ টি যুদ্ধজাহাজ। নতুন সংযোজন হয়েছে বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড। সঙ্গে স্ট্রাইক গ্রুপ হিসেবে পাঁচটি ডেস্ট্রয়ার মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।

ওয়ারশিপের পাশাপাশি কার্গো এয়ারক্রাফট, নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার 'সিহোক', 'ব্ল্যাক হোক' মোতায়েন করা হয়েছে ক্যারিবিয়ান সাগরে। রয়েছে এমকিউ-নাইন রিপার ড্রোন। যা ঘণ্টায় ৩৭০ কিলোমিটার গতিতে ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে। বহন করতে সক্ষম ১৬টি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র।

রয়েছে এফ-থার্টিফাইভ স্টেলথ ফাইটার, হ্যারিয়ার, পি-এইট পোসেইডন যুদ্ধবিমান। যা রাডারের চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। এছাড়াও সুপারসোনিক জেট প্রশিক্ষণ বিমান টি-থার্টিএইট এ টেলন রাখা হয়েছে সেখানে। এতোসব অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্রের পাশাপাশি সাড়ে ৪ হাজার সেনা ও নাবিক মোতায়েনের কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

যুক্তরাষ্ট্রের এসব কর্মকাণ্ডকে চিরন্তন যুদ্ধ বলছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ বুঝতে পারছে তারা একটি চিরন্তন যুদ্ধের দিকে হাঁটছে। এর আগে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো ভেনেজুয়েলার সঙ্গে তারা যুদ্ধ করবে না। অথচ তারা এখন যুদ্ধের দিকে হাঁটছে।’

ভেনেজুয়েলা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের যখন এতো আয়োজন, তখন জাতিসংঘের ড্রাগ ও অপরাধ বিভাগ বলছে, ভেনেজুয়েলা কোকেন উৎপাদন করে না। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ কোকেনের উৎপাদনস্থল কলোম্বিয়া, পেরু ও বলিভিয়া।

সেজু