শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বৈরিতা এখন চরমে। বিরল খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞায় বেইজিংয়ের ওপর আরও ক্ষীপ্ত ওয়াশিংটন। যার কারণে চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ৩০ শতাংশের সঙ্গে যোগ করে নভেম্বরে আরও ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কারোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সব সফটওয়্যার রপ্তানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও বেইজিংকে হুঁশিয়ার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের এমন বাণিজ্য যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যেই ৩০ অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে পুরো বিশ্ববাসী। কারণ মালয়েশিয়ায় আসিয়ান সম্মেলন শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় অ্যাপেক সম্মেলনের আগে ওইদিনই চীনা প্রেসিডেন্ট শি-জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসের অধিপতি হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় হতে যাওয়া অ্যাপেক সম্মেলনেই মূলত শি-ট্রাম্পের মধ্যকার বৈঠকের সুযোগ তৈরি করেছে। আসন্ন বৈঠকে বাণিজ্য উত্তেজনা কতটা কমবে তাই এখন দেখার বিষয়। এরজন্য শি-ট্রাম্প একে অপরকে ছাড় দেয়ার মাধ্যমে সম্পর্কের বরফ কতটা গলাতে পারবেন তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক স্টিফেন নাগি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যাই হোক দুই নেতাকে এক করতে পারায় বেশ খুশি হবে অ্যাপেক সদস্যরা। বাণিজ্য নিয়ে কথা হোক বা না হোক, সেটা ভিন্ন কথা। তবে তারা চাইবে দুই নেতার সম্পর্ক স্থিতিশীল হোক। অ্যাপেক সদস্যরা চাইবেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্য ছাড়াও আরও অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করুক।’
দক্ষিণ কোরিয়ায় শি-ট্রাম্পের বৈঠকের আগে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত বাণিজ্য ইস্যুতে মালয়েশিয়ায় বৈঠক করবেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হি লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। এটিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনা প্রেসিডেন্টের মধ্যে হতে যাওয়া বৈঠকের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আসিয়ান ও অ্যাপেক সম্মেলন ঘিরে ট্রাম্পের এশিয়া সফর মিত্র-প্রতিযোগী সবার জন্যই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ও নাটকীয় হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
অধ্যাপক স্টিফেন নাগি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এশিয়া সফর বেশ নাটকীয় হতে চলেছে। সম্ভবত তিনি এই অঞ্চলের মিত্র, অংশীদার এবং প্রতিপক্ষদের প্রতি জোরালো কিছু বার্তা দেবেন। মুক্ত বাণিজ্যের উপর জোর দেয়ার সম্ভাবনা কম। মনে হচ্ছে এবারের সফরে লেনদেনের কূটনীতির উপর বেশি মনোযোগী হবেন ট্রাম্প। যার মাধ্যমে হয়তো মিত্রদের পাশাপাশি প্রতিযোগীদের সাথেও পুনঃভারসাম্য নিশ্চিতে দৃষ্টি দেবেন।’
এদিকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করায় ট্রাম্পের অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্কারোপে চীনের চেয়ে বেশি বেকায়দায় ভারত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় হতে যাওয়া আসিয়ান সম্মেলনে সশরীরে উপস্থিত না হওয়ার বার্তা দিয়ে এখন আলোচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ক্ষোভ বা কোনো বাণিজ্য কৌশলে এগিয়ে থাকতে আপাতত ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ এড়াতে মোদি ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন কি-না তা নিয়ে চলছে জল্পনা।





