যুদ্ধবিরতির মধ্যে গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় নিজ বসত ভিটায় ফিরছিলেন ৭ শিশুসহ একই পরিবারে ১১ ফিলিস্তিনি। ঠিক তখনই তাদের গাড়িতে ট্যাঙ্ক থেকে গোলাবর্ষণ করে তাদেরকে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। এ নিয়ে চলমান বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যে শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৩৮ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে নেতানিয়াহুর সেনারা।
এর মধ্য দিয়ে ১১ অক্টোবর থেকে ইসরাইল ৪৭ বার যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ গাজার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের। আর এটিকে গণহত্যা বলে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার জন্য ইসরাইলকে চাপ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠিটি।
ইসরাইলেরর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ঠেকাতে হামাসের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সাড়া না দিয়ে উল্টো হামাসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় সাধারণ মানুষের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে হামাস। এমনকি মার্কিন বিশ্বস্ত সূত্রকে ইসরাইলি অপপ্রচার বলেও আখ্যা দিয়েছে তারা।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরও গাজা উপত্যকার প্রায় ৫৩ শতাংশ ভূমি এখনও নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। এরইমধ্যে বন্দিদের মরদেহ ফেরতে হামাস পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না অভিযোগ তুলে গাজা ও মিশরের মধ্যে রাফাহ সীমান্ত না খোলার নির্দেশ দিয়েছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়। অথচ শনিবারও বন্দির মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস। এ নিয়ে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠিটি ২৮ বন্দীর মধ্যে ১২ জনের মরদেহ ফেরত দিয়েছে। তবুও চুক্তি অনুযায়ী হস্তান্তর না করার অভিযোগ তুলে রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলো ইসরাইল। এতে সীমান্তে অপেক্ষায় থাকা ত্রাণবোঝাই ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। ফলে ট্রাকে থাকা খাবারগুলো নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বসিন্দারা বলেন, বেশিরভাগ ট্রাকেই খাবার রয়েছে, যা নষ্ট হতে পারে। তাই এসব খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা দ্রুত সীমান্ত খুলে দেয়ার আহ্বান জানাই। খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও শীতের পোশাক, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী রয়েছে।
এদিকে, পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ এবং ইসরাইলের প্রাণঘাতী হামলায় যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা ঢুকতে দেয়ার জোর আহ্বান জানিয়েছেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি। এমনকি দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।





