ডিজিটাল যুগে ব্যবসা-বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে সাইবার আক্রমণ। শুধু তথ্য চুরি নয়, বরং একটি প্রতিষ্ঠানের পুরো কার্যক্রম অচল করে দেওয়ার মতো শক্তি এখন হ্যাকারদের হাতে। বিমানবন্দর থেকে গাড়ি, বৃহৎ শিল্প-খুচরা বাজার থেকে অনলাইন বাণিজ্য কোনো খাতই আর নিরাপদ নেই।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি হ্যাকাররা আক্রমণ চালায় আরটিএক্সের মালিকানাধীন কলিন্স অ্যারোস্পেসের সিস্টেমে। এর প্রভাব পড়ে লন্ডনের হিথ্রো, বার্লিন ও ব্রাসেলস বিমানবন্দরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের হামলা এখন বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং, খুচরা ব্যবসা—সবখানেই ঝুঁকি বাড়ছে।
পালো আল্টো নেটওয়ার্কের বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট স্যাম রুবিন বলেন, ‘খুচরা ব্যবসায় সাইবার আক্রমণের প্রভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। পয়েন্ট অব সেল সিস্টেম ব্যবহার করা যায় না বা ই-কমার্সে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়, যা প্রতিদিনই মিলিয়ন ডলার ক্ষতি করতে পারে।’
এর আগে ব্রিটেনের খ্যাতনামা খুচরা বিক্রেতা মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারও র্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হয়েছে। হ্যাকাররা কোম্পানির সিস্টেম এনক্রিপ্ট করে মুক্তিপণ দাবি করে চুরি হয়েছে গ্রাহকদের কিছু তথ্যও।
সাইবার সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, দুর্বল পাসওয়ার্ড বা মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন না থাকাই হ্যাকারদের প্রবেশের প্রধান পথ। এর ফলে শুধু ব্যবসায়িক কার্যক্রম নয়, গ্রাহকদের আস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্যাম রুবিন বলেন, ‘সাইবার আক্রমণের কারণে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এসব দক্ষ আক্রমণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করছে, কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে, ফাইল লক করে দিচ্ছে এবং ব্যবসা কিংবা স্বাভাবিক জীবনযাপনকে ব্যাহত করছে।’
তবে আশার খবর হচ্ছে সাইবার প্রতিরক্ষায় এখন এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে নিরাপত্তা টিম রিয়েল-টাইমে হুমকি শনাক্ত করতে পারছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হচ্ছে।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট, কর্মীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সাইবার হুমকি থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন। তাই প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাইবার নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।





