রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এই গোল টেবিল বৈঠকটি ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বরের। ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের নিয়ে পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো বৈঠক করেছিলেন তারা। পর ২০২২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ অভিযানের তিন বছর পর যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে আলোচনার টেবিল আরও একবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন দুই নেতা।
প্রাথমিকভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নেতাদের চাপে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন পুতিন। এরপরই রুশ প্রেসিডেন্টের বৈঠক প্রস্তাবে দ্রুত সাড়া দিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জেলনস্কি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায় ১৫ মে তুরস্কে মস্কোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে প্রস্তুত কিয়েভ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এই বৃহস্পতিবার ১৫ মে তুরস্কে থাকব, এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে পুতিনকে তুরস্কে প্রত্যাশা করছি। আমি আশা করি এবার পুতিন এমন কারণ খুঁজবেন না যাতে তিনি কিছু করতে না পারেন। আমরা যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটিকে সমর্থন করেছেন, সমস্ত নেতারা এটিকে সমর্থন করেন।’
মার্কিন-ইউরোপ চাপে দুই নেতা সরাসরি আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখালেও, জেলেনস্কি-পুতিনের বৈঠক নিয়ে সম্ভাবনার চেয়ে শঙ্কার পাল্লা বেশি বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনায় বসার জন্য দুই নেতার ঘোষণার আড়ালে ভিন্ন কৌশল থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের বিশ্লেষক এবং লেখক ম্যাক্সিমিলিয়ান হেস বলেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনের দাবি পূরণের প্রচেষ্টা হিসেবে এই ধরনের সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বুঝতে পারেন যে ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে। তার কৌশল আসলে এটিকে আরও খারাপ উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। এর অর্থ হল তিনি আলোচনাকে এমন একটি অবস্থানে রাখতে চান যেখানে জেলেনস্কিকে কিছু ছাড় দিতে হবে।’
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধে উভয় পক্ষের কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত হয়েছেন তার সঠিক হিসেব নেই। তবে পুতিনের সাথে ফোনালাপের পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেন, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। উল্লেখ করেন প্রায় দশ লাখ রুশ সৈন্য নিহত হয়েছেন এবং আরও ইউক্রেনীয় সেনা নিহতের সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। যার কারণে ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের সূত্রপাত হিসেবে ধরা ২০২২ সাল থেকে চলমান এ যুদ্ধ।




