ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে আচ্ছন্ন চারপাশ। প্রাণভয়ে তাবু থেকে ছুটে পালাচ্ছেন হতভাগ্য ফিলিস্তিনিরা।
দৃশ্যটি গাজার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরের। শনিবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিসে এই শিবির লক্ষ্য করে হামলা চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। টাইমস অব ইসরাইল জানায়, এদিন সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত ক্যাম্পের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
এক অধিবাসী জানান, তাবুর ভেতর কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছি। নিরাপদেই ছিলাম। হঠাৎ এক তরুণ এসে বলল, এখনই এলাকা ছাড়তে হবে। এই ইহুদিদের কারণে গাজার এক ইঞ্চি জমিও নিরাপদ নয়। বিশ্ববাসীকে বোকা বানানো হচ্ছে। আমরা কোথাও নিরাপদ নই।
এদিকে, গাজায় দ্বিতীয় ধাপে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। শনিবার স্থানীয় সময় রাতে টেলিভিশনের দেয়া ভাষণে বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেন, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ইসরাইলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাসকে সর্বোচ্চ চাপে রাখতে ইসরাইলি সেনাদের নির্দেশ দিয়েছি। এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পুনর্জন্ম লাভ করব। সবদিক থেকে আমাদের ওপর আগ্রাসন বাড়ানো হচ্ছে। ইসরাইল এসব সহ্য করবে না’
গভীর রাতে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বদলে আরও উসকে দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এদিন, মধ্য ইসরাইলে মাজরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সাধারণ মানুষ। সরকার বিরোধীদের অভিযোগ গাজা যুদ্ধের অবসান ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গদি টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্রে নেমেছেন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু প্রশাসনের কাছে জিম্মি বিনিময়ের অগ্রগতি জানতে চেয়ে এদিন রাজধানী তেল আবিবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিশ্রুতির রাজনীতি বাদ দিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করার দাবি তাদের।
এদিকে, জিম্মি ইসরাইলি নাগরিক এলকানা বোবতের নতুন আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। যেখানে দেখা যাচ্ছে টেলিফোনে কারোর সাথে নিজের হতাশা ও যন্ত্রণার কথা ভাগাভাগি করছেন ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি। তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের দ্বৈত নাগরিক ও সেনাসদস্য এদান আলেকজান্ডারের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড। তাদের দাবি এই জিম্মির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসময় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।